শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পায়রা বন্দরের ১৪ শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, অনিয়মের তদন্ত শুরু

পায়রা সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন অস্থায়ী ভিত্তিতে রাজস্বখাতে সৃজনকৃত ১৪ শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়। নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা-২) শেখ মো: শরীফ উদ্দিন, এনডিসি স্বাক্ষরিত বন্দর চেয়ারম্যানকে দেয়া এক নোটিশে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জানা যায়, বন্দর কর্তৃপক্ষের অস্থায়ী ভিত্তিতে রাজস্বখাতে সৃজনকৃত ১৪ শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম হয়েছে। উপরোক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নাম ও পদবী সহ এতদসংক্রান্ত কাগজ পত্রাদির সত্যায়িত অনুলিপি দুই কার্য দিবসের মধ্যে প্রেরনের জন্য বলা হয়েছে। ১৯ মার্চ নৌপরিবহন মন্ত্রনালয় থেকে এ সংক্রান্ত নোটিশ বন্দর চেয়ারম্যানকে প্রেরন করা হয়।

এদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সীমাহীন দুর্নীতি প্রসঙ্গে দুদক, মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ প্রেরন করেছে ভুক্তভোগীরা। যাতে বলা হয় বন্দর কর্তৃপক্ষের সৃজনকৃত ১৪ শূন্যপদের এ নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়ম করে নিয়োগ সিন্ডিকেট। বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (সংস্থাপন ও নিয়োগ) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব তায়েবুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআইএস বিভাগের অধ্যাপক ও পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে এ সিন্ডিকেট। তায়েবুর রহমান মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থী বাছাই করে হেলাল উদ্দিনের কাছে পাঠান। আর হেলাল উদ্দিন পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব হওয়ায় বাছাই তালিকার পরীক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নম্বর দিয়ে থাকেন। এমনকি ভুল হলে খাতায় লিখে দেয়ার সুযোগ দিয়ে সহকারী পরিচালক (হিসাব), ইঞ্জিন ড্রাইভার, সহকারী ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, সিনিয়র একাউন্টস অ্যাসিস্ট্যান্ট, প্রধান সহকারী, ব্যক্তিগত সহকারী, ষ্টেনো টাইপিষ্ট কাম কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, সুকানি, অফিস সহায়ক এবং নিরাপত্তা রক্ষী সহ রাজস্ব খাতের ১৪ পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

এর আগে পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) নাসির উদ্দিন ও নির্বাহী প্রকৌশলী (জেটি) মোস্তফা আশিক আলী’র বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের একটি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকাদারী কাজ ভাগ বাটোয়ারা সংক্রান্ত অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে গনমাধ্যমে কথা বলেন কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব তালুকদার। মোতালের তালুকদারের অভিযোগ, বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) নাসির উদ্দিনের আত্মীয় স্বজন ও নির্বাহী প্রকৌশলী (জেটি) মোস্তফা আসিক আলী বিএনপি জামায়াতের কিছু নেতা কর্মীদের নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরী করে পায়রা পোর্টের সকল ঠিকাদারী কাজ নিজেদের মধ্যে ভাগভাটোয়ারা করে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মহোৎসব করে যাচ্ছেন। নাসির উদ্দিনের আপন বড় ভাই হাসান মাহমুদ পরিচালিত ওয়াটার বার্ডস লিমিটেড এবং এ বি কোম্পানী নামে দুইটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও তাদের একান্ত সহযোগী স্থানীয় বিএনপি ও সাবেক ছাত্রদলের নেতা লিটন গাজীর মালিকানাধীন মেসার্স নুরজাহান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে বন্দরের সব কাজ সাব কন্ট্রাট দেন। এবং মোস্তফা আশিক আলীর ভাইপো রনি বিশ্বাস, নিজাম বিশ্বাস ও স্থানীয় রিয়াজ তালুকদার, তপন বিশ্বাস, তুহিন মৃধাকে দিয়ে কাজ করিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।’

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, বন্দরের ১৪ শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা-২) শেখ মো: শরীফ উদ্দিন, এনডিসি এ সংক্রান্ত কাগজ পত্রাদি চেয়েছেন। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ