যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি অঙ্গরাজ্য থেকে উড্ডয়ন করে প্রায় ৩৭ ঘণ্টার দীর্ঘ ফ্লাইট শেষে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
এই কর্মকর্তা জানান, মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো হামলার সময় একাধিকবার মাঝ আকাশে জ্বালানি নেয়। হামলার লক্ষ্যে বেছে নেওয়া হয় ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো। তিনি বলেন, এই তিনটি স্থাপনাকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র তার সর্বাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমানগুলো ব্যবহার করে ‘মাদার অব অল বম্বস’ নামে পরিচিত জিবিইউ-৫৭ বাংকারবিধ্বংসী বোমা, যার প্রতিটি বোমার ওজন প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড। একটি বি-২ বিমান নাতাঞ্জ কেন্দ্রে দুটি বোমা নিক্ষেপ করে, আর ফোর্দো স্থাপনায় ছোড়া হয় এক ডজন।
এছাড়া ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর দিকে মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয় অন্তত ৩০টি টিএলএএম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। কর্মকর্তারা বলছেন, এসব হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতাকে স্থায়ীভাবে ধ্বংস করা।
হামলার পর হোয়াইট হাউস থেকে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরান যদি কূটনৈতিক পথে না ফেরে, তবে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছি। এটি ছিল আমাদের প্রতিরক্ষার জন্য অপরিহার্য।’
এদিকে, মার্কিন হামলার বিষয়টি স্বীকার করেছে ইরান। তবে তেহরানের দাবি, যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলো কয়েকদিন আগেই খালি করে ফেলা হয়েছিল। তাই এসব স্থাপনায় পারমাণবিক উপাদান ছিল না এবং কোনো বিকিরণ ছড়ানোর আশঙ্কাও নেই।
এই হামলার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতে যুক্ত হলো। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতের কূটনৈতিক সমাধানের পথ আরও সংকুচিত করে তুলতে পারে।