শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাহুল গান্ধীর সাংসদ সদস্য পদ খারিজ, ভোটে লড়তে পারবেন না ৬ বছর

রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করল লোকসভার সচিবালয়। — ফাইল ছবি।

‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে দু’বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। শুক্রবার লোকসভা সচিবালয়ের তরফে এ কথা জানানো হয়।

মোদী পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে বৃহস্পতিবার গুজরাতে সুরাত জেলা আদালত রাহুলকে ২ বছর জেলের সাজা দিয়েছিল। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হল।

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে আন্দোলনের পথে নেমেছে কংগ্রেস। শুক্রবার দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ১২টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাম, জেডি(ইউ), ডিএমকের পাশাপাশি বৈঠকে ছিল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)-ও। এর পরে সংসদ ভবন থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান তাঁরা। ওই আইন বলছে, সাংসদ পদ খারিজ হওয়া রাহুল অন্তত আগামী ৬ বছর কোনও ভোটে লড়তে পারবেন না।

সুরাত জেলা আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা রাহুলকে ১০ হাজার টাকার জামিনে মুক্তি দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত করার উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেননি তিনি। আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এ ক্ষেত্রে ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের পদ রক্ষার পথে অন্তরায় হয়েছে, ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। ঘটনাচক্রে, এক দশক আগে ওই রায় কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন তিনিই।

‘শূর্পনখা বলেছিলেন’! পাঁচ বছর পরে কংগ্রেস নেত্রী রেণুকার মামলা মোদীর বিরুদ্ধে
জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, কোনও অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাংসদ-বিধায়কের দু’বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হলে তৎক্ষণাৎ সাংসদ বা বিধায়ক পদ চলে যাবে। আইন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সেই হিসেবে রাহুলের সাংসদ পদ অবিলম্বে খারিজ হওয়ারই ছিল। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে আগে বলা ছিল, সাংসদ-বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবেন। ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায় আইনের সেই ধারাটি নাকচ করে রায় দিয়েছিল, দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই সাংসদ পদ চলে যাবে।

দু’বছর জেলের সাজা রাহুল গান্ধীর! নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে দোষী সাব্যস্ত।

পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত লালু প্রসাদের সাংসদ পদ বাঁচাতে মনমোহন সিংহের সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্টে দিয়ে পুরনো ব্যবস্থা বহাল রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু রাহুল সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে বাতিল কাগজের ঝুলিতে ফেলে দেওয়ার কথা বলার পর পিছু হটেছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। এবার সুপ্রিম কোর্টের ২০১৩ সালের সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই সাংসদ পদ খারিজ হল ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের।

সূত্র : আনন্দবাজার।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ