পটুয়াখালীর কলাপাড়া থেকে ৬ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া শাহানারা ৩১ বছর বয়সে খুঁজে বের করেছেন তার পরিবারকে। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের পর তাঁর মা’কে খুঁজে বের করেন সে। পরে উপজেলার ধুলাসার এলাকায় তাদের দেখা হয়ে মা-মেয়ে একে অপরকে চিনতে পেরে পরিবারের মধ্যে খুশির জোয়ার বইতে থাকে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২৫ বছর আগে কলাপাড়া থেকে হারানো যায় শাহানারা। পরে তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন তার মা শিরিন বেগম কিন্তু কোথাও খোঁজ মেলেনি। শাহানারা গত একমাস আগে মৎস্য বিভাগের একটি ট্রেনিংয়ে কাজ করতে আসেন নিজ গ্রামে। কিন্তু তখনও জানতেন না এটাই তার জন্মস্থান। তবে তার সন্দেহ হচ্ছিল এই গ্রামটি তার কেন যেন পরিচিত লাগে। একপর্যায়ে এই গ্রামেই স্থানীয় সুজন নামের এক যুবকের মাধ্যমে পরিবারের খোঁজ পায় সে।
ফিরে আসা জাহানারা উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের পশ্চিম ধুলাসার গ্রামের বাসিন্দা মৃত আলী হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে তিনি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মানিককাঠি গ্রামের আ. খালেকের স্ত্রী। তার ১৩ বছরের এক কন্যা এবং পাঁচ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পরিবারকে ফিরে পেয়ে জীবনের নতুন অধ্যায়ের কথা বলছেন ফিরে আসা শাহানারা।
গনমাধ্যমকে শাহানারা বলেন, তখন আমি কিভাবে বরিশাল যাই সেটুকু আমার মনে নেই। তবে ওখানে এক মহিলা আমাকে পেয়ে বরিশালের একটি এতিম খানায় দিয়ে আসে। পরে আমি সেখানেই বড় হই। সেখানে আমার নাম রাখা হয় ইয়াসমিন। একটি পর্যায়ে গত ১৬ বছর আগে আমাকে বিয়ে দেন জেলা প্রশাসক। আমি এখন পরিবারের সাথে বরিশাল বসবাস করি।
শাহানারা (ইয়াসমিন) এর মা শিরীন আক্তার বলেন, আমার মেয়ে যখন হারিয়ে যায় তখন তার বয়স ৬ বছর। এরপর থেকে আমি খুঁজি নাই এমন কোন জায়গা নেই। আমি প্রতিদিন কান্না করি এই মেয়ের জন্য। আল্লাহ তায়ালা আমার মেয়েকে আমার বুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
ধুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুর রহিম বলেন, গতকালকে আমার কাছে আসার পরে আমি বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে তার পরিবারের সন্ধান পাই। পরে তার হারিয়ে যাওয়ার কথা উভয় পক্ষের কাছে শুনে নিশ্চিত হই যে সেই হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি এই শাহানারা। আজকে সে তার মায়ের কাছে এবং পরিবারের কাছে ফিরছে।