খেলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে। সামলাতে হয় রক্ষণও। তারপরও স্ট্রাইকারের মতো গোল করছেন হামজা চৌধুরী। সৌন্দর্যে প্রতিটি গোলই ছাড়িয়ে যাচ্ছে পূর্বেরটা। দুর্দান্ত হেডের পর ফ্রি কিকে গোল করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে চোখ ধাঁধাঁনো ওভারহেড গোল করেছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী হামজা। পরে দলের পাওয়া পেনাল্টিতে বুদ্ধিদীপ্ত পানেনকায় বল জালে পাঠিয়েছেন। তারপরও ঘরের মাঠে নেপালের বিপক্ষে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ বাঁশির আগে গোল খেয়ে হতাশার ২-২ সমতায় মাঠ ছেড়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
জাতীয় স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে ২৯ মিনিটে গোল খেয়ে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মিতুল মার্মাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন রোহিত চাঁদ। অথচ প্রথম গোলটা পেতে পারত বাংলাদেশ। দেশের জার্সিতে হামজা চৌধুরী মিডফিল্ডে খেললেও দলের প্রয়োজনে কখনো ফুলব্যাকে, কখনো সেন্ট্রাল ডিফেন্সেও শ্রম দেন। তিনি বক্স টু বক্স দাপিয়ে বেড়ানোর পরও গোল হজম করে বাংলাদেশ। সিঙ্গাপুর, হংকং ম্যাচের পর নেপালের বিপক্ষেও ঘটল তেমনই ঘটনা।
হামজাকে তাই উইঙ্গার ও সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ডের পজিশনে গিয়ে গলা ফাঁটিয়ে বল চাইতে হয়। ম্যাচের ১৫ মিনিটে তেমনই গলা ফাঁটিয়েও বল না পেয়ে হতাশ হন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল শোধ করার তাগিদে হাই লাইন ধরে খেলতে শুরু করেন। ৪৬ মিনিটে দুর্দান্ত ওভারহেডে জালে বল পাঠান তিনি। তার গোলে ১-১ গোলের সমতায় ফেরে হাভিয়ের ক্যাবরেরার দল।
হামজার গোলটিও চোখে লেগে থাকার মতো। নেপালের ডিফেন্ডারকে শরীর দিয়ে প্রেস করে রাখেন তিনি। হেড দিয়ে বল বিদপমুক্ত করার সুযোগ না দিয়ে লাফিয়ে ওভারহেড শট নেন। ওয়েন রুনি কিংবা জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের মতো না হলেও টেক্সট বুক ওভারহেডে করা তার গোলটি এক যুগে বাংলাদেশের জার্সিতে করা কোন ফুটবলারের সেরা গোলই বলা যায়।
পরেই হামজা দলকে লিডে ফেরান। ম্যাচের ৫০ মিনিটে নেপাল বক্সে বাংলাদেশের ফুটবলারকে ট্যাকল করে। রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান। যদিও পেনাল্টি নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে হামজার শটে ছিল দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের পরিষ্কার ছাপ। বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তরা ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে লিওনেল মেসি, সের্গিও রামোস, মোহামেদ সালাহদের পানেনকা দেখে অভ্যাস্ত। হামজা তেমনই পানেনকা শট নিলেন। চোখ ইশারা, পায়ের কাজ আর শরীরের ঝাঁকুনিতে গোলরক্ষককে বিভ্রান্ত করে একপাশে লাফিয়ে পড়তে বাধ্য করেন তিনি গোলপোস্টের মাঝ বরাবর আলতো শটে বল পাঠান জালে।
স্বাগতিক ভক্তদের সামনে বাংলাদেশ জিততে যাচ্ছে ভেবেই কিংবা ভারত ম্যাচের জন্য হামজাকে চনমনে রাখতে ৭৫ মিনিটে পাঁচ ম্যাচে ৪ গোল করা মিডফিল্ডারকে তুলে নেন কোচ ক্যাবরেরা। বদলি করান তরুণ ইংল্যান্ড প্রবাসী কিউবা মিশেলের সঙ্গে। কিন্তু কিউবার অভিষেকে কিংবা হামজার দুর্দান্ত দুই গোলের উপহার জয়ে দিতে পারেননি মিতুলরা। ম্যাচের যোগ করা সময়ে অনন্ত তামাঙ্গের নিশ্চিত ফিরিয়ে দেওয়ার মতো শট গ্রিপ করতে গিয়ে ভুল করেন গোলরক্ষক মিতুল। ডাগ আউটে বসে থাকা হামজা তখন একরাশ হতাশা নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশও মাঠ ছাড়ে হতাশার সমতা নিয়ে।







