পাঁচজন আরোহী নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক দেখতে গিয়ে ধ্বংস হওয়া ডুবোযান টাইটানের কিছু টুকরো উদ্ধার করার পর তাতে “সম্ভাব্য মানব দেহাবশেষ” পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্ট গার্ড।
বুধবার সাবমার্সিবল যানটির টুকরোগুলো ক্যানাডার সেন্ট জনসে নিযে যাওয়া হয়।
কোস্ট গার্ড বলছে, যেগুলোকে মানব দেহাবশেষ বলে মনে করা হচ্ছে তা এখন মার্কিন চিকিৎসা কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবেন।
ডুবোযান টাইটান গত ১৮ই জুন পাঁচজন আরোহী নিয়ে উত্তর আটলান্টিকের গভীর তলদেশে থাকা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েছিল।
প্রায় ১১১ বছর আগে নিমজ্জিত ওই জাহাজটি দেখতে সাগরে ডুব দেবার ৯০ মিনিট পর ১২,৫০০ ফুট নিচে পানির প্রচণ্ড চাপে টাইটান ধ্বংস হয়ে যায়।
ডুবোযানটির যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন ওই যাত্রার আয়োজনকারী কোম্পানি ওশানগেটের প্রধান ৬১ বছর বয়স্ক স্টকটন রাশ, ব্রিটিশ অভিযাত্রী হ্যামিশ হার্ডিং (৫৮), পাকিস্তানি-ব্রিটিশ ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার পুত্র সুলেমান দাউদ (১৯), ও ফরাসী ডুবুরি পল-হেনরি নারগোলেট (৭৭)।
টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল ১৯১২ সালে, হিমশৈল বা সাগরে ভাসমান আইসবার্গের সাথে ধাক্কা লেগে। এতে মারা যায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। ১৯৮৫ সালে আটলান্টিকের তলায় টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়া এবং বিশেষ করে এ ঘটনা নিয়ে হলিউডে তৈরি সিনেমা বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয়তা পাবার পর এটি এক অত্যন্ত ব্যয়বহুল পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, ডুবোযানটির নিহত যাত্রীদের কোন দেহাবশেষ পাওয়া যাবে বলে তারা প্রথমদিকে আশা করেননি।
ওশানগেটের এই টাইটান নামের ডুবোযানটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মনীতির অধীন ছিল না। এ নিয়ে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ যানটির নির্মাণকৌশলের সমালোচনা করেছেন।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মচারীরাও এটি কতটা নিরাপদ তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
তবে মি. রাশ – যিনি নিজেও এ দুর্ঘটনায় নিহত হন – বলেছিলেন, যারা তার এই যানটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তারা নতুন আবিষ্কারের বিরোধী।
মার্কিন কোস্ট গার্ড বলছে, এই যানটি কীভাবে ধ্বংস হলো তার কারণ বের করার তদন্তে তারা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছেন।
কোস্ট গার্ডের মেরিন বোর্ড অব ইনভেস্টিগেশন বা এমবিআই এখন টাইটানের ধ্বংসাবশেষগুলো পরীক্ষা করে দেখবে।
এমবিআইয়ের প্রধান ক্যাপ্টেন জেসন নিউবোয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ঘটনার কারণ বের করতে এখনো অনেক কাজ করতে হবে। বিবিসি বাংলা।