সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘সকল ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার রুখে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পায়রা সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু’

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল বলেছেন, ‘৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ কিলোমিটার প্রস্থের আউটার এন্ড ইনার নোঙর সুবিধা সম্বলিত ১০.৫ মিটার চ্যানেল গভীরতার পায়রা সমুদ্র বন্দর সকল অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে গভীর সমুদ্র বন্দরের পথে যাত্রা শুরু করেছে। আগামীতে বন্দরে প্রথম টার্মিনালের সাথে যুক্ত হচ্ছে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল (১২০০মি.), কন্টেইনার টার্মিনাল (১৪০০মি.), লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল কোল টার্মিনাল, এলএনজি টার্মিনাল।’

আজ রোববার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টায় মহান স্বাধীনতা দিবসে Jan De Nul কর্তৃক সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিং সম্পন্ন হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট রাবনাবাদ চ্যানেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের প্রথম স্মার্ট বন্দর হিসেবে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে পায়রা বন্দরকে গড়ে তোলা হচ্ছে। দু’এক দিনের মধ্যেই সরাসরি মাদার ভেসেল লাইটার জাহাজ ছাড়াই বন্দরের ফাস্ট টার্মিনালে অন্য খালাস করবে। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বিদেশি জাহাজ পায়রা বন্দরের টার্মিনালে এসে ভিড়বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক এ অপারেশনাল কার্যক্রমের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।’

বেলজিয়াম ভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান Jan De Nul কর্তৃক বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট রামনাবাদ চ্যানেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ মহিববুর রহমান বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দর আজ থেকে বিশ্বের একটি শ্রেষ্ঠ বন্দরে পরিণত হলো। এই বন্দরের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং জীবন মানের উন্নয়ন ঘটবে। এজন্য তিনি দক্ষিণাঞ্চল বাসীর পক্ষ থেকে দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বন্দরের স্কিম পরিচালক কমডোর রাজিব ত্রিপুরা বলেন, আন্তর্জাতিক মানের একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৪ মাস গবেষণা করে এবং তাদের প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক মানের একটি চ্যানেল ডিজাইন করে রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই চ্যানেল ব্যবহার করে এখন অনায়াসেই বন্দরে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩২ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট PANMAX আকৃতির বড় জাহাজ ৪০-৫০ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে সরাসরি পায়রা বন্দরে ভিড়তে পারবে।

পায়রা বন্দর সূত্র জানায়, আগামী মে মাসে বন্দরের ফাস্ট টার্মিনাল স্থাপনের কাজ শেষ হলে বন্দরের রাজস্ব আয় বাড়বে আট থেকে দশ গুণ বেশি। বন্দরের এই সক্ষমতার মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে এবং অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। দেশের প্রথম এ স্মার্ট সমুদ্র বন্দরের স্মার্ট সার্ভিস, স্বল্প ট্যারিফে পন্য খালাস এবং সড়ক পথ, নদী পথ ও সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের সুবিধা থাকায় ইতিমধ্যে দেশী বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শিল্প কারখানা স্থাপন, সোলার প্যানেল প্লান্ট, শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রি, ডক ইয়ার্ড সহ বিভিন্ন ধরনের লাভজনক বড় প্রকল্পে তাদের পুঁজি বিনিয়োগে লিখিতভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বন্দর সূত্র আরও জানায়, ২০১৩ সালের ১৫ই নভেম্বর পায়রা বন্দর যাত্রা শুরু করে। ২০১৯ থেকে পায়রা বন্দর অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করে। গত এক বছরে পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে আয় হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। আগামী বছর থেকে পায়রা সমুদ্র বন্দর তার নিজস্ব রাজস্ব আয় থেকে চলতে পারবে এবং পায়রাই হবে আগামীর বাংলাদেশ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ