লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আমন উৎপাদন হবে। দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, সারা দেশ থেকেই আমনের বাম্পার ফলনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমন একটি মূল ফসল। আমরা মনে করেছিলাম, শ্রাবণ মাসে মাত্র একদিন বৃষ্টি হয়েছে, কৃষকরা হয়ত ধান লাগাতেই পারবে না। উৎপাদন কমে যাবে। কিন্তু এই প্রতিকূলতার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।আরেকটি বিষয় অনেক নিচু এলাকায় অন্য বছর ধান লাগানো যেত না। কারণ বিলে পানি এসে ডুবে যায়। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় এই বিলের বা নিচের জমিতেও ধান লাগিয়েছে অনেকে।সবাই বলছে যে স্মরণাতীতকালে সবচেয়ে ভালো ধান হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডমেনিকো স্কালপেল্লি এর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনুমান করছে পৃথিবীতে একটি খাদ্য সংকট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটাকে বিবেচনায় নিয়েই সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দূরদর্শী। তিনি আমাদেরকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে বলেছেন।কৃষি মন্ত্রণালয়ও গুরুত্বের সাথে কাজ করছে। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সহযোগিতা করছে। গত ৬ বছর ধরে রোহিঙ্গাদের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন সেটিও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মাধ্যমেই দেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শেষে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডমেনিকো স্কালপেল্লি বলেন, বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনরকম সম্ভাবনা নেই। তবে ইউএসএ, অস্ট্রেলিয়া, ইউকের মতো উন্নত দেশসহ সকল দেশকেই আগামী বছর খাদ্য নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বের সব দেশকেই গরীব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলছে আন্দোলন সমাবেশ করে সরকারের পতন ঘটাবে, শেখ হাসিনা পালাবার জায়গা পাবে না, পালাবার রাস্তা পাবে না। শেখ হাসিনা কি পালায়? উল্টো দেশে আসে। যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে দেশে আসতে দেবে না, আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে চাপ প্রয়োগ করি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছেন। বঙ্গবন্ধুও কোনোদিন এদেশ থেকে পালিয়ে যাননি।’
তিনি বলেন, প্রতিদিন বিএনপি বলছে শেখ হাসিনা পালাবার রাস্তা পাবে না। সরকারের কেউ পালাবে না। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে এবং ইনশাআল্লাহ জনগণকে নিয়ে রাজনৈতিকভাবেই যত হুমকি আসুক আমরা সেটা মোকাবিলা করবো।
সরকারের মন্ত্রীরা ১০ ডিসেম্বরকে নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ওইদিন দেশে যুদ্ধক্ষেত্র ঘোষণা করেছেন-বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আমরা নির্বাচিত সরকার। আমাদের দায়িত্ব হলো দেশবাসীর, সব শ্রেণিপেশার মানুষের শান্তি নিশ্চিত করা, তাঁদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক সুশৃঙ্খল, অনেক দক্ষ। তারা সক্ষমতা অর্জন করেছে, সংখ্যায়ও তারা অনেক বেশি। তারা এটা করবে। তার সঙ্গে আমরা যারা রাজনৈতিক কর্মী বা আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, আমাদেরও দায়িত্ব সরকারকে সমর্থন করা, সহযোগিতা করা। আমরা সেটিি বলি।