রাজশাহীতে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৪) বাসায় ঢুকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হামলার সময় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসী (৪৪) গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত হামলাকারী লিমন মিয়াকে (৩৫)।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজপাড়া থানার ডাবতলা এলাকার স্পার্ক ভিউ ভবনের ৫ তলায় তাদের বাসায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত হামলাকারী লিমন মিয়া (৩৫) গুরুতর আহত হলে তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লিমন গাইবান্ধা জেলার ফুলছরি থানার ভবানিগঞ্জের এইচএম সোলাইমান শহীদের ছেলে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিচারকের স্ত্রীর পূর্ব পরিচিত ছিল লিমন (অভিযুক্ত হামলাকারী)। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে সদস্য হওয়ায় তার সঙ্গে পরিচয় হয় আহত তাসমিন নাহারের। তিনি লিমনকে বিভিন্ন সময় আর্থিক সহযোগিতা করতেন। একপর্যায়ে প্রতিনিয়ত তার কাছে সহযোগিতা চাইলে আহত তাসমিন নাহার অপারগতা প্রকাশ করেন। এর জের ধরে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন অভিযুক্ত হামলাকারী। এ ঘটনায় জিডিও করা ছিল। তবে হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।
গত ৬ নভেম্বর সিলেটের জালালাবাদ থানায় ভুক্তভোগী তাসমিন নাহার লুসী একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, হামলাকারী লিমন মিয়ার (৩৫) সঙ্গে কোয়ান্টাম ফাইন্ডেশনের সদস্য হওয়ার পর আমার পরিচয় হয়। পরিচিত হওয়ার পর থেকে সে আমার মোবাইল নম্বর নেয়। তার পরিবার আর্থিকভাবে কিছুটা দুর্বল হওয়ায় প্রায় সময় সে আমার কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিত। একটা পর্যায়ে সে প্রতিনিয়ত আমার কাছে সহযোগিতা চাইলে আমি সহযোগিতা করতে অপারগতা প্রকাশ করি।
অভিযোগে তাসমিন নাহার আরও উল্লেখ করেন, আমি সহযোগিতা করতে না চাওয়ায় সে তার মোবাইল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দেয়। গত ৩ নভেম্বর সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে লিমন আমার মেয়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কল করে আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনদের হত্যার হুমকি দেয়। আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান জানান, দুপুর আড়াইটায় লিমন নিজেকে মিলন নামে বিচারক আব্দুর রহমানের ভাই পরিচয়ে বাসায় প্রবেশ করেন। এসময় বাসায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসী ও ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন ছিলেন।
বাসার কেয়ারটেকার মাহবুব হোসেন বলেন, কাজের মেয়ের মাধ্যমে বাসায় মারামারি হচ্ছে জানতে পারি। তখন ঘরে গিয়ে দেখি তিনজনই নিস্তেজ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। গুরুতর আহত তাওসিফকে প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখনো সে কাতরাচ্ছিল। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে জজের স্ত্রী এবং লিমনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অভিযুক্ত হামলাকারী লিমন মিয়াও আহত অবস্থায় বর্তমানে রামেক হাসপাতালের একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।







