আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় করে ইফতার পার্টি উদযাপন না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দিয়েছেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে একটা নির্দেশনা আছে, সেটা হলো- রমজান মাসে সরকারিভাবে কোনো বড় ইফতার পার্টি উদযাপন করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বেসরকারিভাবেও এ ধরনের বড় ইফতার পার্র্টির আয়োজনকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বলা হয়েছে যে, কারও যদি দায়-দাবি থাকে, তাহলে যেন সেই অর্থে খাদ্য কিনে গরিব মানুষের মাঝে যেন বিতরণ করা হয়।
মো. মাহবুব হোসেন বলেন, এছাড়াও সভায় ‘অফশোর ব্যাংকিং আইন, ২০২৪’র খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে অনিবাসী বক্তি বা বাইরের কোন প্রতিষ্ঠান, যারা এখানে ইনভেস্ট করবে, তারা অফশোর অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে। অফশোর বাংকিং করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। তবে যারা আগেই লাইসেন্স পেয়েছে, তাদের নিতে হব না।
তিনি বলেন, মার্কিন ডলার, ইউরো, পাউন্ড, জাপানী ইয়েন ও চায়নিজ ইয়ান মুদ্রায় ব্যাংকিং কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে। এই আইনের আওতায় অফশোর বাংকিং করার জন্য তফশিলি ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো লাইসেন্স গ্রহণ করবে। এরপর অনিবাসী বাংলাদেশে বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত গ্রহণ করতে পারবে, ঋণ দিতে পারবে। ওই আমানত স্বাভাবিক ব্যাংকি পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে পারবেন। বিদেশে যে বাংলাদেশী আছেন, তার পক্ষে তার কোনো আত্মীয় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন, সহায়তাকারী হিসেবে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারবেন। অফশোর ব্যাংকিয়ের ক্ষেত্রে কোন ঋণ সীমা বেধে দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, যে কোন পরিমান ঋণ নিতে পারবে।
সমসাময়িক আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থার সঙ্গে সংগতি রেখে, অফশোর ব্যাকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে এটি বাংলাদেশে প্রথম ইপিজেডে শুরু হয়, সেখানে কিন্তু কারেন্ট অ্যাকাউন্টের মতো কোন ইন্টারেস্ট দেওয়া হয় না। এখন অফশোর বাংকিংয়ে ইন্টারেস্ট দেওয়া হবে। ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে পারলে, ব্যাংকের নরমাল ব্যবসার প্রয়োজনে সে যখন বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তার তুলনায় ব্যয় কম হবে।
মাহবুব হোসেন বলেন, বহু দেশ এ পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের বৈদেশিক রিজার্ভ ও আর্থিক কাঠামো সমৃদ্ধ করেছে। তারা শত শত বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট পেয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশীরা বালাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাকিং ব্যবস্থায় যখন টাকা জমা রাখে, তখন কিন্তু টাকা নিয়ে যেতে পারমিশন নিতে হয়। অফশোর হলে স্বাধীনভাবে এটা অপারেট করা যাবে। এখানে ব্যবসা করে যারা লাভবান হবে, তারা এখানে টাকা রাখতে আগ্রহী হবে বলে আমরা আশা করছি।
মাহবুব হোসেন বলেন, শুধু রিজার্ভ বাড়াতেই এটি করা হচ্ছে না। অর্থনৈতিকভাবে আমরা লাভবান হবো, সেজন্য আমরা এটি করছি। আইন অনুযায়ী ওই অ্যাকাউন্টে যে লেনদেন হবে, সেই সুদের ওপর কোন শুল্ক আরোপ করা হবে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ইকোনমির দিকে তাকিয়ে এটি চালু করা হচ্ছে। সরকার মনে করছে, এই পদ্ধতি অনুসরণ করে অনেক দেশ সুফল পেয়েছে।
তিনি বলেন, সেভিংস আকাউন্ট যেভাবে পরিচালনা করা হয়, সেভাবেই এই অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করা যাবে। ওই অ্যাকাউন্টে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা জমা দেওয়া যাবে।