আমেরিকার শাসনব্যবস্থা দ্বিদলীয়। দু’টি দলের মধ্যেই মূলত নির্বাচনী লড়াই হয়ে থাকে। আমেরিকার ক্ষেত্রে সেই দুই দল রিপাবলিকান পার্টি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। কিন্তু তৃতীয় দল গঠন করেছেন মাস্ক।
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বোঝালেন, দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় তৃতীয় দল এলে কী হয়। মাস্কের দলকে ‘হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এ-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই নতুন দলকে কোনও গুরুত্ব দিতেই রাজি নন তিনি।
শনিবার নতুন দল গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন মাস্ক। নাম দিয়েছেন ‘আমেরিকা পার্টি’। আমেরিকার শাসনব্যবস্থা দ্বিদলীয়। দু’টি দলের মধ্যেই মূলত নির্বাচনী লড়াই হয়ে থাকে। আমেরিকার ক্ষেত্রে সেই দুই দল রিপাবলিকান পার্টি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। এই দুইয়ের বাইরে থেকে মাস্ক তৃতীয় দল আনলেন। আমেরিকার দ্বিদলীয় শাসনব্যবস্থাকেও চ্যালেঞ্জ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন টেসলা, স্পেসএক্সের কর্ণধার।
রোববার (আমেরিকার স্থানীয় সময়) নিউ জার্সি থেকে ওয়াশিংটনে যাওয়ার সময় ট্রাম্পকে এই নতুন দল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় তৃতীয় দল গঠন করা হাস্যকর। এখানে শাসনব্যবস্থা দ্বিদলীয়। বরাবরই তা-ই ছিল। এর মধ্যে তৃতীয় দল শুধুই বিভ্রান্তি তৈরি করে। কখনওই কোনও তৃতীয় দল সফল হয় না এখানে। সুতরাং, ও (মাস্ক) এটা উপভোগ করুক, কিন্তু আমার মনে হয় এটা হাস্যকর।’’
মাস্ক নতুন দল ঘোষণা করার পর সমাজমাধ্যমেও তাঁকে কটাক্ষ করেছেন ট্রাম্প। লিখেছেন, ‘‘মাস্ক একেবারে লাইনের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছেন, এটা দেখে আমি দুঃখিত। গত পাঁচ সপ্তাহে উনি ট্রেনের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছেন। আমেরিকায় তৃতীয় দল একটা জিনিসই ভাল করতে পারে, সেটা হল সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। র্যাডিক্যাল লেফ্ট ডেমোক্র্যাটদের আমরা সেটাই করতে দেখেছি।’’
ট্রাম্পের মন্তব্যে আমেরিকায় রিপাবলিকানদের সঙ্গে মাস্কের বিরোধ আরও তীব্র হল। কয়েক মাস আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রাম্পের হয়ে ঢালাও প্রচার করেছিলেন মাস্ক। রিপাবলিকান পার্টির অন্যতম বড় সমর্থক এবং আর্থিক সহায়ক ছিলেন তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এতই ঘনিষ্ঠ ছিল যে, ক্ষমতায় আসার পর হোয়াইট হাউসে আলাদা দফতর তৈরি করে মাস্ককে নিয়োগ করেন ট্রাম্প। তবে সে সব এখন অতীত। মাস্ক ইস্তফা দিয়েছেন ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে। মার্কিন প্রশাসনে খরচ ও কর কাটছাঁটের একটি বিল এনেছেন ট্রাম্প।
সম্প্রতি তা কংগ্রেসের উভয়কক্ষে পাশ হয়েছে এবং আইনে পরিণত হয়েছে। ট্রাম্পের সেই ‘বড় ও সুন্দর’ বিল নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। মাস্ক দাবি করেন, এই আইনের ফলে আমেরিকার অর্থনীতি ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাবে। ট্রাম্প সে দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। বরং তাঁর দাবি, মাস্ক ব্যক্তিগত সুবিধা-অসুবিধার কথা ভেবে নতুন আইনের বিরোধিতা করছেন।
নিজের নতুন দলকে মাস্ক আমেরিকার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নথিভুক্ত করিয়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তিনি জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের ‘মিড-টার্ম ইলেকশন’-এই লড়বে তাঁর আমেরিকা পার্টি। আমেরিকার ইতিহাসে এর আগেও একাধিক তৃতীয় দল গঠিত হয়েছে। তবে ভোটের ময়দানে তারা স্থায়ী হতে পারেনি। মাস্কের দল কতটা সাফল্য পায়, সে দিকে নজর রয়েছে সকলের।
আনন্দবাজার পত্রিকা।