শনিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে সংঘাতে উস্কানির অভিযোগ

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্যের বিরূদ্ধে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ ও সংঘাতে উস্কানির অভিযোগ তুলেছে সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন।

রোববার যুক্তরাষ্ট্রের আট কংগ্রেসম্যান এইলি ক্রেইন, করি মিলস, পল এ গসার, ডোগ লামাফা, রনি এল জ্যাকসন, র্যান্ডি ওয়েবার, ব্রেইন বেবিন ও গে্লন গ্রোথম্যানকে পাঠানো এক চিঠিতে সংগঠণটি ওই অভিযোগ তুলে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ওই আট জনসহ মোট ১৪ জন কংগ্রেসম্যান জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন ও শানি্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েনে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান। এছাড়া ওই চিঠিতে বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপারে অনেক নেতিবাচক বক্তব্য ছিল।

সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ রবিবার আট কংগ্রেসম্যানকে লেখা চিঠিতে অভিযোগ করেছে, কংগ্রেসম্যানদের ওই চিঠির পর বাংলাদেশে পুলিশের ওপর বিএনপি হামলা চালিয়েছে। কংগ্রেসম্যানরা বাংলাদেশে যে ধরনের পরিস্থিতি আছে বলে দাবি করেছিলেন তাই প্রমাণ করতে চেয়েছে বিএনপি। সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ বিনয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যানদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপে নিরুত্সাহিত করেছে।

চিঠিতে সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ কংগ্রেসম্যানদের উদ্দেশ্যে বলেছে, আপনাদের চিঠিটি শুধু রাজপথে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করে এমন সহিংসতাই ঘটাচ্ছে না, বরং আন্তর্জাতিকভাবে একটি শানি্তপূর্ণ, আইন মেনে চলা ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে আমাদের ভাবমূর্তিকেও প্রভাবিত করছে।

সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ কংগ্রেসম্যানদের উদ্দেশ্যে আরো বলেছে, ‘আমরা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি আপনার সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্বযক্ত করতে চাই। আর আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলতে ও বাংলাদেশের শানি্তপূর্ণ জনগণের পাশে দাঁড়াতে আপনাদের বিনীতভাবে অনুরোধ করবো।’

চিঠির শুরুতে সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশের সদস্যরা কংগ্রেসম্যানদের গত বৃহস্পতিবারের চিঠির বক্তব্যের নিন্দা জানান।

তারা লিখেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, চিঠিটি কল্পকাহিনীর ওপর ভিত্তিতে এবং মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের সর্বোচ্চ মর্যাদার অযোগ্য বিদ্বেষপূর্ণ উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়েছে।

’ সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ চিঠিতে কংগ্রেসম্যানদের উদ্দেশ্যে লিখেছে, জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাসকে লেখা কংগ্রেসম্যানদের ওই চিঠি প্রতারণামূলক। কারণ ওই চিঠি প্রতিনিধি সভায় চর্চা ও নীতিবিষয়ক কমিটি নির্ধারিত কংগ্রেসনাল মানের লংঘন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েটি পর্যবেক্ষণে অন্য কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কংগ্রেস সদস্যদের হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে।

চিঠিতে সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ লিখেছে, ‘একটি সার্বভেৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চর্চা জাতিসংঘের ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনেও নিষদ্ধি। কংগ্রেসম্যানদের গত বৃহস্পতিবারের চিঠির বক্তব্যগুলোও অধিকার নামে একটি সংগঠণের প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশ লিখেছে, ‘একটি একক সন্দেহজনক উত্সের ভিত্তিতে কথা বলা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হবে। অধিকার এর প্রতিবেদন বিভ্রানি্তকর এবং অর্ধসত্য ও সন্দেহজনক বক্তব্যে ভরা।’ সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশের সদস্যরা তথ্য যাচাই করতে কংগ্রেসম্যানদের প্রতি অনুরোধ জানান। কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও, আর্চবিশপ বিজয় ডি ক্রুজ, অধ্যাপক বিমল চন্দ্র বড়ুয়াসহ অন্তত ২১ জন সেকুলার সিটিজেন্স বাংলাদেশের পক্ষে কংগ্রেসম্যানদের চিঠি পাঠিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ