তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন ও রাষ্ট্রকে মানবিক করার ক্ষেত্রে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর বিরাট উদ্যোগ নিলেও বিএনপিসহ নাগরিক সমাজের একাংশ এটিকে অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। সবকিছুতে না বলার সংস্কৃতি এবং না বলার রাজনীতি রাষ্ট্রের জন্য ভালো নয়।’
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বিশ্ব সম্প্রদায় থেকেও তা প্রশংসিত হচ্ছে। শুধু প্রশংসা করতে পারে না আমাদের দেশের বিএনপিসহ কিছু দল আর কিছু ব্যক্তিবিশেষ। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। কাজ করলে সমালোচনা হবে। যে যাই বলুক না কেন, যতই সমালোচনা করুক না কেন, আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা পোষণ করি। সেই কারণে আমরা মনে করি সমালোচনা করলে ক্ষতি নাই। কিন্তু অন্ধের মত সমালোচনা ভালো নয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার মধ্যে চারটি প্রোগ্রাম আছে। তার মধ্যে একটি প্রোগ্রাম একেবারে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য। তিনি যত চাঁদা দেবেন, সরকার সমপরিমাণ চাঁদা সেখানে দিয়ে দেবে। তিনি যদি মাসে এক হাজার টাকা দেন সরকার আরো এক হাজার টাকা দিয়ে দেবে। সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার ক্ষেত্রে এবং রাষ্ট্রকে মানবিক করার ক্ষেত্রে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা একটি বিরাট উদ্যোগ।
তিনি বলেন, ‘নাগরিক সমাজের কিছু সদস্য, যারা কারণে-অকারণে জাতিকে জ্ঞান দেন, তারাও প্রধানমন্ত্রীর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুকে অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। হয়তো ক’দিন পরে দেখা যাবে তারা এর মধ্যে কি ভুল আছে সেটি বের করার চেষ্টা করবে। এরা কোন কাজ করে না, অন্যে কি কাজ করে সেটির ভুল ধরে। আমি এজন্য ওদের নাম দিয়েছি ভুল ধরা পার্টি। রাত বারোটার পরে এই ভুল ধরা পার্টি টেলিভিশনে সরব হয়।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্যেই ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা চালু করেছেন। এখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২২ প্রকার ভাতা দেয়া হয়। প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষ নানা প্রকারের ভাতা পায়। আজকে মানুষের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে শেখ হাসিনা ছিন্নমূল মানুষকে জমিসহ ঘর করে দিচ্ছেন।’
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি দেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে নতুন নতুন বিশ্বমানের হাসপাতাল হচ্ছে, সেখানে সেবার মূল্য বেশি। সেজন্য আমাদের সরকার স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন করেছে। হাসপাতালগুলোর অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। সিটি করপোরেশন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত অর্থোপেডিক সেন্টার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের একটি জনপ্রিয় আস্থার প্রতীক হোক সেই কামনা করি।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাবের সভাপতিত্বে এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। সোসাইটির মহাসচিব কাজী শফিউল আজম, ট্রেজারার এম এ ছালাম, চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সহসভাপতি আলমগীর পারভেজ বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার এম এ ছালামের ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবা কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে সেবাকেন্দ্রের মঙ্গল কামনা করে সবাই দোয়ায় অংশ নেন।