বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বিদেশ সফরগুলোতে পশ্চিমাদের এমন বার্তা দিয়েছে সরকার বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ডিপ্লোমেটস ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিন আয়োজিত সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বিদেশ সফরগুলোতে পশ্চিমাদের এমন বার্তা দিয়েছে সরকার-এ কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন নিয়ে মাথাব্যথা থাকলে বিনিয়োগ বাড়াতে বলা হয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোকে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফরের প্রসঙ্গ তুলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা শুধু উপদেশ দেয়, যা আপনারা (গণমাধ্যম) পছন্দ করেন। নির্বাচন, অমুক-তমুক…এবারে এগুলো নিয়ে কোনো আলাপ করেনি। একবারে তারা বলেছে, ইন্দো-প্যাসিফিকে আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। তারা শুধু উপদেশ দেবে না বা ভয় দেখাবে না, তারা টাকা নিয়ে আসবে।
ব্যবসা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশ নানা ইস্যু তৈরি করে এ কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চাপ প্রয়োগকারী কোনো দেশের সঙ্গে আপাতত ব্যবসায়িক চুক্তি করবে না বাংলাদেশ। তবে পরাশক্তিগুলোর মেরুকরণের মাঝে অর্থনৈতিক অগ্রগতি বজায় রাখতে বাংলাদেশ কূটনীতিক সাবধানতা অবলম্বন করবে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, আমরা আমেরিকাকেও বলেছি, ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমাদের টাকা দরকার। আপনারা টাকা নিয়ে আসেন। আপনারা শুধু উপদেশ নিয়ে আসেন, উপদেশে আমাদের মন ভরে না। আপনারা যদি চায়নাকে হারাতে চান, তাহলে আপনারও চাইনিজদের মতো টাকার ঝুড়ি নিয়ে আসেন এবং সহনীয় প্রস্তাব নিয়ে আসেন। আহাম্মকি প্রস্তাব নিয়ে আসলে তো হবে না।
পশ্চিমারা ব্যবসার জন্য নানা ইস্যু তৈরি করে থাকে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চাপ প্রয়োগকারী কোনো দেশের সঙ্গে আপাতত অস্ত্র বা ব্যবসায়িক চুক্তি করবে না দেশ। ফ্রান্সের সঙ্গে বিমান কেনার চুক্তির পর মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বোয়িং অর্ধেক দামে বিমান বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ২৫০ বিলিয়ন তহবিল নিয়ে আসার চেষ্টা করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য। স্বার্থ হাসিলের জন্য অনেক দেশ প্রোপাগান্ডা করছে। উদ্দেশ্য জিনিস বিক্রি করা, ব্যবসা করা। আমরা বলেছি, যুদ্ধতে আমরা নেই। আমরা বলেছি, বোয়িং কিনতে চাই। আর যায় কোথায়! বড়লোকের দেশরা খুব চাপ দিচ্ছে। বোয়িং অর্ধেক দামে বিমান বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বলছে বোয়িংয়ের দাম অর্ধেক করে দেবে। খালি ব্যবসা। বাকি যে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, এগুলো ভাঁওতাবাজি। প্রেশার দেয়ার জন্য এগুলো করছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে নানা মন্তব্য ঘিরে দেশে চলছে নানা আলোচনা। কেউ কেউ পশ্চিমা কূটনীতিকদের তোড়জোড়কেই সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। তবে এরইমধ্যে গত এক মাসে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতর সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।