বিশ্বকাপ ফুটবল আজ শুরু। আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ খেলা চলবে।এশিয়ার অন্যতম ধনী দেশ কাতারে হচ্ছে বিশ্বকাপ।
উত্তপ্ত গরম, তাই বিশ্বকাপ শীতে আনা হয়েছে। ফিফার টেবিল থেকে সিদ্ধান্ত আনতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। আয়োজকের নাম ঘোষণা হওয়ার পরও বহুভাবে চেষ্টা হয়েছিল যেন কাতার থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চটা তুলে নিয়ে অন্য কোনো দেশে বসিয়ে দেওয়া হয়। গরমে খেলতে পারবে না বলে কাতারের কাছ থেকে কেড়ে নিতে কমচেষ্টা হয়নি। কাতার বলে দিল স্টেডিয়ামে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
রাজনৈতিক হানাহানি, দেশে দেশে যুদ্ধ, মারণাস্ত্র নিক্ষেপ, যেখানে যেটাই হোক, বিশ্বকাপ ফুটবল ময়দানে ফোটা ফুলগুলো সৌরভ ছড়াবে আহত মানুষগুলোর মধ্যেও। করোনায় পেছায়নি একমাত্র খেলা সেটা বিশ্বকাপ ফুটবল। বাইশতম আসর বাইশেই হচ্ছে। বিশ্বকাপ ফুটবল জুনে শুরু হয়ে জুলাইয়ে শেষ হয়। এবার ব্যতিক্রম। শীত মৌসুমে নভেম্বরে শুরু হয়ে ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে।
কাতারে উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপিয়ান দর্শক আসতে পারবে না। তারা যেমন পরিবেশ চায় সেটি দিতে আনন্দের চাদর দিয়ে ঢেকে দেবে কাতার। সেটিও করে দিল। কোনো ভাবেই কাতারকে তীরবিদ্ধ করা যাচ্ছিল না। গোটা দুনিয়া ছিল তাদের বিপক্ষে। কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অবশেষে কাতারের মরুভূমিতে ইতিহাস লিখতে যাচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল।
চাট্টেখানি কথা নয়। ২০০২ সাল, আজ থেকে ২০ বছর আগে যেখানে শতভাগ সুযোগসুবিধা থাকার পরও অর্থনৈতিক উন্নত দেশ জাপান-কোরিয়াকে যৌথভাবে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করতে দিল ফিফা। আর সেখানে ২০ বছর পর অপ্রতুলতার মধ্যে কাতারকে একাই আয়োজক বানিয়ে দিয়েছিল ফিফা। এটি একটি ইতিহাস যে, এশিয়ার প্রথম কোনো দেশ এককভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। এটাই এশিয়ার শেষ আয়োজন কি না, নিশ্চিত না। তবে ৩২ দেশ নিয়ে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের এটাই যে শেষ বিশ্বকাপ। আগামী আসরে ৪৮ দেশ খেলবে।
আয়োজক দেশ হিসেবে কাতার লড়াই করবে। বাছাইয়ে খেলেছিল কাতার। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে ঢাকায় এসেছিল। যোগ্যতার ভিত্তিতে না হলেও কাতার সরাসরি লড়াই করবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফুটবল ময়দানে এই যুদ্ধের লড়াইয়ে কাতার কোনো আলোচনায় নেই। সব আলো পড়ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, পর্তুগাল, স্পেন, ইংল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়ামের দিকে। সার্বিয়া, তিউনিশিয়া, মরক্কো, ক্যামেরুন, পোল্যান্ড, ইকুয়েডর, ওয়েলস, কতটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে সেটা সময় বলে দেবে।