বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরগুনা- ১ আসনে সাংসদ শম্ভুকে ঠেকাতে মাঠে টুকু

গোলাম সরোয়ার টুকু।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-১ (আমতলী- তালতলী-বরগুনা সদর) আসনে দলীয় মনোনয়নে পাঁচ বারের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ জেষ্ঠ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু।

তৃণমুল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সাংসদ শম্ভুর কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে টুকুর সমর্থণে মনোনয়ন প্রত্যাশায় কাজ করছেন। তৃণমুল নেতাকর্মীদের দাবী আওয়ামীলীগের দুর্গ খ্যাত বরগুনা-১ আসন ধরে রাখতে টুকুর বিকল্প নেই। মনোনয়ন পেতে টুকু আমতলী-তালতলী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। উৎফুল্ল সাধারণ জনগণ ও তৃণমুল নেতাকর্মীরা। টুকুতেই আস্থা সাধারণ মানুষের। ক্লিণ ইমেজের রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা গোলাম সরোয়ার টুকু ছিলেন

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। বরগুনা সরকারী কলেজের দুই বার নির্বাচিত ভিপি ছিলেন তিনি। বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বরগুনা-৩ (আমতলী-তালতলী) আসনের নির্বাচন পরিচালনা করেছেন।

জানাগেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা- ১ (আমতলী-তালতলী-বরগুনা সদর) আসনে যে ক’জন নেতা আওয়ামীলীগ মনোনয়ন পেতে প্রত্যাশা করছেন তাদের মধ্যে টুকু অন্যতম। বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক উপমন্ত্রী ও জেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু সংগঠনকে কুক্ষিগত করে পরিবার লীগে পরিনত করেছেন। তার বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়েই তিনি চালাচ্ছেন দলীয় কর্মকান্ড এমন অভিযোগ করেন গোলাম সরোয়ার টুকুর। এতে কোনঠাসা হয়ে পরেছেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে আছেন।

দীর্ঘসময় দল ও সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বলে দাবী করেন আমতলী উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন।

এসব কারণে জেলা আওয়ামীলীগ, অঙ্গ সংগঠনের বেশির ভাগ নেতাকর্মীরা এখন তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নিতে একাট্টা। তিনি একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়ে আমতলী-তালতলী জনগনের সাথে কোন সম্পৃক্ততা ছিল না বলে দাবী করেন আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির হাওলাদার।

এছাড়াও দলীয় কোন্দলে তার ছিল সিদ্ধহস্ত বলে অভিযোগ তৃণমুল নেতাকর্মীদের। গত ১৫ বছরে আমতলী ও তালতলীর উন্নয়নে তেমন গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখেননি সাংসদ শম্ভু। এতে তার প্রতি সাধারণ মানুষ ও তৃণমুল নেতাকর্মীদের ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ত্যাগী নেতাকর্মীরা এখন সাংসদ শম্ভুর বিরাগভাজন বলে দাবী করেন বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সদস্য ও সাবেক আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান।

সাধারণ মানুষ ও তৃণমুল নেতাকর্মীরা পরিবর্তনের ডাক দিয়েই ঝাঁপিয়ে পরেছেন ক্লিণ ইমেজের ছাত্রলীগ রাজনীতি থেকে বেড়ে ওঠা গোলাম সরোয়ার টুকুর সমর্থণে। একজন সুবক্তা ও কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে গোলাম সরোয়ার টুকু সততা ও সৃজনশীল চিন্তা এবং সাংঠনিক দক্ষতা দিয়ে বরগুনার সাধারণ মানুষের কাছে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন টুকু বলে জানান তৃণমুল নেতাকর্মীরা।

বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, বরগুনার মাটি ও মানুষের হৃদয়জুড়ে আছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ভালবাসা। এ জন্য প্রত্যেকটি নির্বাচনে এখানকার মানুষ আওয়ামীগকে নির্দ্ধিধায় ভোট দিচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের এই ভালবাসাকে পূঁজি করে এখানে যিনি দীর্ঘদিন সাংসদের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা এখন পরিবর্তন চায়।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে জনগনের কল্যাণে কাজ করে জাতির জনকের সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রীর স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করবো।

বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ তুলছেন তারা আদৌ আওয়ামীলীগ করেন কিনা আমি জানিনা। তাদের অনেকেই ভোট কেন্দ্রে যায় না ও ভোট দেয়না। তবে আমি বিগত দিনে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মুল্যায়ন করেছি।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে আমি নির্বাচন করবো না চাইলে যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে কাজ করবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ