নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীতে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলওয়ে ভ্রাম্যমান জাদুঘর দেখতে উপচেপড়া ভিড় হয় শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার দর্শনার্থীদের। তিন দিনের ঝটিকা সফরের অংশ হিসেবে গত শুক্রবার সকালে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের ভ্রাম্যমান জাদুঘরটি আসে। এরপর থেকে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার থেকে বারশো লোকজন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে জাদুঘরটি পরিদর্শন করেন।
মঙ্গলবার শেষ দিনেও ছিল বঙ্গবন্ধু প্রেমী উদসুক জনতার ভীড়।দুই কক্ষ বিশিষ্ট ট্রেনের ভ্রাম্যমান জাদুঘরের প্রথমটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে আর দ্বিতীয়টি স্টাফদের থাকা, খাওয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্লাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা দিক, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার গঠন, শপথ, বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয়ের নানা ইতিহাস নিয়ে সাজানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে জাদুঘর। বিনামূল্যে ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি বগিকে সুসজ্জিত করে প্রদর্শন করা হচ্ছে তার ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র।সম্প্রতি রেলওয়ের উদ্যোগে মানুষের মধ্যে তার বর্ণাঢ্য জীবনগাঁথা ছড়িয়ে দিতে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এ ভ্রাম্যমান জাদুঘরটির উদ্বোধন করা হয়।
জাদুঘরটিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, জীবনকাল আর সংগ্রামী ইতিহাস সম্বলিত ভিডিও প্রর্দশন করা হচ্ছে, অডিও সিস্টেমে সম্প্রচার করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ।জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পৈত্রিক বাড়ি, ব্যবহৃত চশমা, দলের প্রতীক নৌকা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় তামাক পাইপ ও মুজিব কোট। এছাড়া মুজিব শতবর্ষের লোগো, বঙ্গবন্ধুর লেখা বই, মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ, পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের রেপ্লিকাও রয়েছে। এ জাদুঘরে ১৯২০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ১২টি গ্যালারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।জাদুঘরটিতে আরও রয়েছে জয়বাংলা স্লোগানের আদলে তৈরি করা সৃজনশীল একটি বুকশেলফ। সেখানে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী, ‘আমার দেখা নয়া চীন’সহ তার কর্মজীবনের ওপর রচিত গুরুত্বপূর্ণ বই। এখানে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১০০-১২০ টি।
নরসিংদী অক্সফোর্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ আল-আমিন বলেন, আমাদের ব্যস্ততার কারণে জাদুঘরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানা হয়ে উঠে না। তবে, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর উপর অনেক বই পড়েছি।জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক সোহাগ আহমেদ জানান, ১ আগস্ট চট্টগ্রাম থেকে এই ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘর যাত্রা শুরু করে। বিভিন্ন জেলা ঘুরে নরসিংদীতে তিন তিনদিন অবস্থান শেষে পরবর্তী গন্তব্য হবে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন। খুব ভালো লাগছে মানুষ জাদুঘরটি দেখতে আমাদের অনেক সাড়া দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তৃণমূলের মানুষকে জানানোর জন্য রেলের এ উদ্যোগ সাড়া জাগিয়েছে। মানুষ সহজেই বিনামূল্য জাদুঘরটি প্রদর্শন করার সুযোগ পাচ্ছেন।