দুই সন্তানের জননী গৃহবধু শাহিদা বেগমের (২৮) মরদেহ আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে স্বামী হারুন অর রশিদ চৌকিদার পালিয়েছে। শাহিদার বাবা আব্দুল কাদের চৌকিদারের অভিযোগ হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে চালিয়ে দেয়ার নাটক করা হচ্ছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে সোমবার রাতে। মঙ্গলবার বিকেলে বাবার কাছে শাহিদার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানাগেছে, ১৫ বছর পুর্বে আমতলী উপজেলার শাহজাহান চৌকিদারের ছেলে হারুন অর রশিদ চৌকিদারের সঙ্গে কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার বাটিয়াভিটা গ্রামের আব্দুল কাদের চৌকিদারের কন্যা শাহিদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শাহিদাকে হারুন অর রশিদ বিভিন্ন অযুহাতে নির্যাতন করে আসছে। ওই দম্পতির দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
গত জানুয়ারী মাসে হারুন অর রশিদ প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে না জানিয়ে আমতলী উপজেলার নীলগঞ্জ গ্রামের শানু মিয়ার কন্যা নার্গিসকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী শাহিদার সাথে বেশ বিরোধ চলে আসছে। স্বামী হারুন অর রশিদ প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিসকে মেনে নিতে চাপ দেয়। কিন্তু শাহিদা এনে রাজি হয়নি। এনিয়ে স্বামী হারুন অর রশিদ বেশ কয়েকবার প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে মারধর করেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
গত ২০ মার্চ হারুন অর রশিদ তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে তার বাড়ীতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে তাদের বিরোধ আরো তীব্র আকার ধারন করে। সোমবার রাতে ঘরের আড়ার সাথে শাহিদার গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় দেখতে পায় স্বামী হারুন। পরে তিনি প্রথম স্ত্রী শাহিদাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওইখানে তার মরদেহ রেখে তিনি পালিয়ে যান। স্বজন ছাড়া মরদেহ হাসপাতালের ফ্লোরে পড়ে থাকে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে মরদেহ বাবা আব্দুল কাদের চৌকিদারের কাছে হস্তান্তর করেছে। শাহিদার বাবার অভিযোগ জামাতা হারুন অর রশিদ দ্বিতীয় স্ত্রীকে ঘরে তোলার পর থেকে তার মেয়েকে বেশ কয়েক দফায় মারধর করেছে। জামাতা ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস পরিকল্পিতভাবে তার মেয়েকে হত্যা করেছে। পরে হত্যা থেকে রক্ষা পেতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা বলে নাটক করছে। এ ঘটনার পরপর স্বামী হারুন অর রশিদ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস বেগমসহ পরিবারের লোকজন পালাতক রয়েছে। এ বিষয়ে স্বামী হারুন অর রশিদের মুেেঠাফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মেহেরিন আশ্রাফ বলেন, স্বজনরা শাহিদা নামের এক গৃহবধুর মরদেহ হাসপাতালের লেখে পালিয়ে গেছে। পরে পুলিশে খবর দিয়ে মরদেহ তাদের হাতে হস্তান্তর করেছি।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছি। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ বাবার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।