দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাবাকে খুঁজে পেলেন ডিডি বোসওয়েল নামে এক মার্কিন নারী। প্রথমবারের মতো নিজের বাবার সঙ্গে দেখা হওয়ার একটি আবেগঘন মুহূর্তের ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি।
দ্য নিউজউইক জানিয়েছে, বর্তমানে ৩২ বছর বয়সি বোসওয়েলের জীবনের মোড় ঘুরে যায় মাত্র ১৬ বছর বয়সে। সে সময় একদিন মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার পর তিনি জানতে পারেন, যাকে তিনি ছোটবেলা থেকে বাবা জেনে এসেছেন, তিনি আসলে তার আসল বাবা নন।
নিউজউইককে বোসওয়েল বলেন, ‘আমার মা বলেছিলেন- তার স্বামী আমার বাবা নন। এটি শুনে প্রথমে অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু এরপর থেকে আমার শৈশবের অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাই। আমি সব সময় তার কাছ থেকে অন্য ভাই-বোনদের চেয়ে আলাদা আচরণের শিকার হতাম।’
এর পর থেকেই নিজের আসল বাবাকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন বোসওয়েল। একপর্যায়ে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমেও নিজের পূর্বপুরুষ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন তিনি। এই লক্ষ্যে ২০১৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো একটি ডিএনএ পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে এই পরীক্ষার মাধ্যমে বংশগত সম্পর্ক থাকা যেসব নাম বেরিয়ে আসে সেগুলো তার কাছে খুবই অপরিচিত লেগেছিল।
মার্কিন নারী বলেন, ‘আমি পরিচিত এবং মায়ের পুরোনো সহপাঠীদের জিজ্ঞেস করলাম—কিন্তু কিছুই জানতে পারলাম না।’
তবে ওই ডিএনএ পরীক্ষায় একটি পদবি এবং কিছু সম্ভাব্য আত্মীয়ের সন্ধান পেয়েছিলেন তিনি। পরে তাদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টাও করেন। তবে বোসওয়েলের কথাকে শুরুর দিকে সবাই সন্দেহের চোখে দেখছিলেন।
অবশেষে চলতি বছর ডিএনএ বিশ্লেষক এবং ব্যক্তিগত তদন্তকারীদের সহায়তা নেন বোসওয়েল। এতে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তারা তার সম্ভাব্য বাবার ছবি, ঠিকানা এবং সম্পূর্ণ পারিবারিক বংশানুক্রম তৈরি করে দেন।
বাবাকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে বোসওয়েল বলেন, ‘তার বাবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রোফাইলে গিয়ে দেখি, আমার মায়ের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে।’
পরে সম্ভাব্য বাবার এক কন্যার সঙ্গেও যোগাযোগ করেন বোসওয়েল। তারাই বাবাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করেন।
সম্প্রতি ওকলাহোমা থেকে টেক্সাসে এসে বোসওয়েলের সঙ্গে দেখা করেন তার আসল বাবা। তাদের প্রথম সাক্ষাৎটি ছিল অবিশ্বাস্য। এ বিষয়ে বোসওয়েল বলেন, ‘মনে হচ্ছিল, এটি একটি স্বপ্ন। আমার প্রত্যাশা খুব বেশি ছিল না। কারণ আমি আবার আঘাত পেতে চাইনি।’
বোসওয়েল জানতে পেরেছেন, তার বাবার আরও চার সন্তান রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মাত্র ১০ বছরের। নতুন সম্পর্কের আবিষ্কার বোসওয়েল ও তার বাবার জীবনে আনন্দ এবং একতা নিয়ে এসেছে।