শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী বাস পুকুরে ১৭ জন নিহত, আহত ২৫

ঝালকাঠি-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় একটি ৬০/৭০ যাত্রী নিয়ে একটি বাস পুকুৃরে পড়ে ১৭ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও দমকল বাহিনী।

শনিবার সকাল দশটার দিকে গাবখান ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশসূত্র জানায়, সকালে বাশার স্মৃতি পরিবহন নামের বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৬৫৪৯) প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে বরিশাল যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ছত্রকান্দা ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দ্রুত গতিতে আসা বাসটি হঠাৎ উল্টে পুকুরে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঝালকাঠি থানা পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার কাজ শুরু করে।

সূত্র জানায়,ঝালকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন সরকার জানান, এখন পর্যন্ত আটজন নারী, ছয়জন পুরুষ ও তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত অবস্থায় ২৫ জনকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত যাদের পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন ১. তারেক রহমান (৪৫); পিতা পান্না মিয়া ভান্ডারিয়া পৌরসভা থানা ভান্ডারিয়া, ২. সালাম মোল্লা (৬০); পিতা মুজাফফর আলী ভান্ডারিয়া পৌরসভা থানা ভান্ডারিয়া ৩. খাদিজা বেগম (৪৩); স্বামী-মৃত মাওলানা নজরুল ইসলাম ৪. খুশবো আক্তার (১৭) ;পিতা মাও. নজরুল ইসলাম; গ্রাম নিজামিয়া থানা রাজাপুর, ৫. শাহীন মোল্লা (২৫) পিতা মৃত সালাম মোল্লা ভান্ডারিয়া পৌরসভা থানা ভান্ডারিয়া, ৬. সুমাইয়া (৬) পিতা জালাল হাওলাদার; গ্রাম পশারিবুনিয়া ভান্ডারিয়া ৭. আবদুল্লাহ (৮) পিতা দেলোয়ার হোসেন; গ্রাম চর বোয়ালিযা বাখরগঞ্জ ৮. রহিমা বেগম (৬০); স্বামী মৃত লাল মিয়া রিজার্ভ পুকুর পাড় ভান্ডারিয়া ৯. আবুল কালাম হাওলাদার ;পিতা মৃত লাল মিয়া হাওলাদার ১০. রিপামনি (২) ;পিতা- রিপন মেহেদীগঞ্জ সদর ১১. আইরিন আক্তার (২২); স্বামী রিপন হাওলাদার মেহেদীগঞ্জ ১২. নয়ন (১৬); পিতা নজরুল ইসলাম বলাইবাড়ি রাজাপুর, ১৩. রাবেয়া বেগম (৮০); স্বামী মৃত ফজলুল হক মৃধা উত্তর শিয়ালকাঠি ভান্ডারিয়া, ১৪. সালমা আক্তার মিতা (৪২); পিতা তৈয়বুর রহমান বাশবুনিয়া কাঠালিয়া ।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন, আবুল বাশার ;কাঠালিয়া, রাসেল মোল্লা; ভান্ডারিয়া, ফাতিমা; ভান্ডারিয়া, রাসেল; ভান্ডারিয়া, মিফতা; নলছিটি, রিজিয়া; কাঠালিয়া, আরজু; কাঠালিয়া, মনোয়ারা; রাজাপুর, সুইটি; ভোলা, রুকাইয়া; বাউফল, আজিজুল; নলছিটি, আলাউদ্দিন; রাজাপুর, সোহেল; রাজাপুর, আবুল কালাম; রাজাপুর, আকাশ বরগুনা, সোহাগ; সাতক্ষিরা, নাঈমুল ;মঠবাড়িয়া, সিদ্দিকিুর; বাউফল, মনিরুজ্জামান; ভান্ডারিয়া, আল-আমিন ঝালকাঠি ও সাব্বির বরিশাল।

এ ছাড়া দুইজনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে যাদের নাম জানা যায়নি।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলীকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে।

দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে আহত যাত্রী রাসেল মোল্লা জানান, ৪০ আসনের বাসটি সকাল ৮.৪৫ মিনিটে ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছাড়ে। পথি মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী ওঠানোর ফলে যাত্রী সংখ্যা হয় প্রায় ৭০ জন। বাসটির ছাদেও কয়েকজন যাত্রী ছিল।

বাসটি দ্রুত গতিতে ঝালকাঠির ছত্রকান্দা ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ অতিক্রমকালে চালক মোহন সুপারভাইজারের সাথে কথা বলছিল , এ সময় হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের বামদিকের পুকুরে পড়ে যায়।

ঝালকাঠি বাসমালিক সমিতির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মু: নাসির উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত বাসের ড্রাইভার এবং সুপারভাইজারের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। হেলপার আকাশ (১৭) কে পাওয়া গেছে।

ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষ থেকে লাশ দাফন ও পরিবহনের জন্য এক লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ