র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে র্যাব সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। র্যাবের আইনও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি পাওয়ায় র্যাব ডিজি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, আদালত প্রাঙ্গন থেকে পালিয়ে গিয়ে দু’জঙ্গি সদস্য যেন অপ্রীতিকর কিছু ঘটাতে না পারে সে বিষয়ে র্যাব সদস্যরা সর্বদা সতর্ক রয়েছে।
জঙ্গি সদস্যদের অপতৎপরতার ব্যাপারে র্যাব সদস্যরা সর্বদা সতর্ক অবস্থানে থাকে, এ কথা উল্লেখ করে র্যাব ডিজি বলেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জঙ্গিদের অপতৎপরতা নির্মূল করতে যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় র্যাব প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর আদালত পাড়া থেকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দু’জঙ্গি সদস্যকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ‘সমন্বয়ের অভাব’ ছিল। এ ঘটনা অবশ্যই দায়িত্বরত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যর্থতা ছিল।
এম খুরশীদ হোসেন জানান, শুধু পুলিশকে এককভাবে বলছি না। পুলিশের সঙ্গে সবার একটা সমন্বয় থাকার কথা ছিল। সেখানে কোথাও না কোথাও সমন্বয়ের অভাব ছিল। এ কারণে ওখানে যেভাবে লোক থাকার কথা ছিল, কিংবা জঙ্গিরা যখন পালিয়েছে, তখন যে তথ্য জানানোর কথা ছিল, সেই জায়গাগুলোতে কোথাও অভাব ছিল। যে কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
র্যাব ডিজি বলেন, ‘জঙ্গি ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। র্যাব সবসময় মানবাধিকারকে সমুন্নত রেখে দায়িত্ব পালন করবে, এটিই নতুন পরিকল্পনা।
নিষেধাজ্ঞা থাকায় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে র্যাবের কোনো সমস্যা হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞায় কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের যে কর্মকর্তাদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের নিয়ে কিছু-কিছু প্রশ্ন জানতে চেয়েছে। আমরা প্রমাণসহ জবাব দিয়েছি। সেক্ষেত্রে আমাদের কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।’
নিষেধাজ্ঞা শিথিল হচ্ছে কি না জানতে চাইলে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘সম্ভাবনা আছে। তারা যেসব বিষয়ে জানতে চেয়েছিল সেগুলোর অনেক কিছু ফেক (ভুয়া) ছিল, তাদেরকে মিসগাইড করা হয়েছে। আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ যতকিছু দিয়েছি, তারা সন্তুষ্ট। যারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তারা এখন র্যাবের ভূয়সী প্রশংসা করছে।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব প্রধান বলেন, ‘যখন নির্বাচন হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তখন নির্বাচন কমিশনের আওতায় থাকে। সামনে যে নির্বাচন, তাতে সব দল অংশ নেবে। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সেই মূল দায়িত্ব আমরা পালন করব।’
র্যাব ইচ্ছা করলে যেকোনো কাজ করতে পারে না, আমাদের কিছু বিধি আছে উল্লেখ করে এম খুরশীদ হোসেন জানান, ‘আমাদের দায়িত্বের মধ্যে থেকেই কাজ করতে হয়। র্যাব জবাবদিহির বাইরে না, আমরা ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদরদপ্তরকে অবহিত করি।’
ডিজি বলেন, ‘র্যাবের কোনো সদস্য বিন্দুমাত্র ভুল করলে নজির নেই যে, কেউ সেখান থেকে রেহাই পেয়েছে। যে অপরাধ করেছে, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র্যাব শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে না, মানবিক বিষয়গুলো নিয়েও কাজ করে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ নভেম্বর দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে পুলিশের চোখে-মুখে পিপার স্প্রে করে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা।