বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্নিঝড় রেমালে রুপান্তরিত হয়ে উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের এক টানা গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শনিবার সকাল ৯টায় এটি পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯০ কি.মি. দক্ষিনে অবস্থান করছিল। এতে পায়রা, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ০১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্নিঝড় মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শনিবার সকাল ১১ টায় উপজেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, সিপিপির উপ -পরিচালক আছাদ উজ জামান, দুর্যোগ ও ত্রান কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির সহ জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। সভায় দুর্যোগকালীন সময় ১৫৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র, ২০ টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুতের পাশাপাশি শিশু খাদ্য ও শুকনা খাবার মজুদ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়া কুয়াকাটার বহুতল ভবনগুলো দুর্যোগের সময় আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। দুর্যোগে করনীয় সম্পর্কে প্রচার ও মানুষকে সচেতন করতে ৩১৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখার তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রান কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির।
এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো: মহিববুর রহমান এমপি শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর পরিদর্শনে যান। এসময়
প্রতিমন্ত্রী অধিদপ্তরের কর্মকান্ড সম্পর্কে অবহিত হোন। তিনি বঙ্গোপসাগরে সম্ভাব্য ঘুর্ণিঝড়ের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী পূর্বাভাস প্রযুক্তি সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান। এসময় দেশের দুর্যোগ পূর্বাভাস ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় সহযোগীতার আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিমন্ত্রী সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে কথা বলেন। তিনি দুর্যোগ মোকাবেলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।
এদিকে কলাপাড়া উপকূলীয় এলাকার জনগন, মৎস্যজীবি ও নৌযান সমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোষ্টগার্ড। শনিবার সকাল নয়টায় মৎস্য বন্দর আলীপুর- মহিপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরন করে কোষ্টগার্ডের সদস্যরা। এসময় তারা খাপড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থানরত ট্রলার সমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্নিঝড়ের সময় করনীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন।