গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আলোচিত সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম এক কলেজ ছাত্রীকে রিসোর্টে রেখে রাত্রি যাপনের ঘটনাকে ঘিরে গাজীপুর আদালতে রোববার মামলা হয়েছে।
ধর্ষন, প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ, অন্যায় কার্যকলাপে সহায়তা ও সত্য চাপা দেয়ার অভিযোগে গাজীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) সহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তা ও স্টেনোগ্রাফারের বিরুদ্ধে গাজীপুর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেছন কলেজছাত্রী ঝর্ণা আক্তার ওরফে বর্ষা (১৯)। তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা। আদালত গাজীপুর পিবিআইকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে আদেশ দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার অভিযুক্তরা হলেন- গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার দক্ষিণ স্বরমঙ্গল গ্রামের সৈয়দ মো. মিজানুর ইসলাম, সাবেক পুলিশ সুপার কাজী সফিকুল আলম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম, ওসি (ডিবি) দেলোয়ার হোসেন ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের স্টেনোগ্রাফার মো. আব্দুল করিম।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি রাতে কলেজছাত্রী ঝর্ণার ফোন পেয়ে তাকে গাজীপুরের একটি রিসোর্ট থেকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। পরে ধর্ষন মামলা থেকে রক্ষা পেতে গাজীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম ও ডিবি পুলিশের ওসি দেলাওয়ার হোসেনের পরামর্শে ওই ওসির প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে ১৮ জানুয়ারি কলেজছাত্রী ঝর্ণাকে বিয়ে করেন ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম। বিয়ের পর ওসি মিজান একদিনের জন্যও ছাত্রীর সাথে সংসার করেননি এবং কোন খোঁজখবর নেননি। ধর্ষনের আলামত নষ্ট করে গত এপ্রিল মাসে ওই কলেজছাত্রীকে গোপনে একতরফা তালাক প্রদান করেন ওসি মিজান।
রোববার দুপুরে ঝর্ণা আক্তার বর্ষা তার মাকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, রিসোর্ট থেকে ডিবি পুলিশ উদ্ধার করে তাকে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যায়। তার কাছে সব জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু বিচার না করে তাকে মিজানুর ইসলামের সাথে বিয়ে দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে রক্ষা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ হেড কোয়াটারে ওসি মিজানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে এসপি কাজী শফিকুল আলম তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, মিরাজুল ইসলাম ও ওসি ডিবিকে ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওসি মিজান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দায়সারা রিপোর্ট প্রদান করেন। তিনি অভিযোগ করেন, এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি। গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ তার অধিনস্ত কর্মকর্তারা তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি এ ঘটনার জন্য তাদের বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, আমি তাকে বিয়ে করেছিলাম। বনিবনা না হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে আইন মেনে তালাক দিয়েছি।