বর্ণাঢ্য নানা আয়োজনে ও উৎসবমুখর পরিবেশে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি) এ উদযাপিত হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।
দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচির শুরু হয় শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বেলুন উড়িয়ে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির কামনায় প্রতীকী বার্তা প্রেরণ করে দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য। পরে প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন ৩৬ জুলাই চত্বর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মাঠ কর্মীদের সমবেত অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বের হয়। র্যালিটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ৩৬ জুলাই চত্বরে এসে শেষ হয়। সেখানে দিবসের উপর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনাসভা পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরীফ রায়হান। এতে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ এবং রেজিস্ট্রার মোঃ আবদুল্লাহ্ মৃধা। বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, গাকৃবির ২৮ বছরের পথচলায় আমরা অর্জনের যে দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলেছি, তা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং আমাদের সম্মানিত গবেষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আমরা দায়িত্ববান, আমরা সম্ভাবনাময় এবং আমরা বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি উদ্ভাবন ও টেকসই উন্নয়নের ভবিষ্যত নির্মাতা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, গাকৃবি আগামী দিনে দেশের কৃষি-শিক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড স্থাপন করবে।
শেষে এ দিবসের উপর ‘ক্যাম্পাস মোমেন্টাম’ শিরোনামে আহ্বান করা অনলাইন ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটে। বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের কল্যাণ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসের উদযাপন পরিণত হয় আরও বর্ণিল ও প্রাণবন্ত উৎসবে।
প্রসঙ্গত :১৯৯৮ সালের এ দিনে ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ ইন এগ্রিকালচার (ইপসা) থেকে দেশের ১৩তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে গাকৃবি। যার দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় গাকৃবি টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) র্যাঙ্কিং ২০২৫ এবং ২৬ এর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও রাখে গৌরবময় অবস্থান। আবার উরি র্যাঙ্কিং ২০২৫ এ জাতীয়ভাবে প্রথম হয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট এন্ড অ্যাপ্লিকেশন’ ক্যাটাগরিতে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গাকৃবির অবস্থান ৭৭তম।
সাম্প্রতিক কিউএস র্যাঙ্কিয়েও দেশসেরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেতাব অর্জন করেছে ২৮ বছরে পদার্পণকারী এ সেন্টার অব এক্সিলেন্স খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়টি। টানা তিনবছর ধরে ইউজিসির এপিএ মূল্যায়নেও হয়েছে প্রথম। অন্যদিকে গাকৃবির বিজ্ঞানীগণ এ যাবৎ ৯৩টি ফসলের উন্নত জাত এবং ২০টির বেশি কার্যকরী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে করেছেন অধিক সমৃদ্ধ।









