বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১৫০ জন আন্দোলনকারী। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কোটা সংস্কারের এ আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আন্দোলন চলবে। চিকিৎসাব্যবস্থা শেষ করেই আমরা আজকেই ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করব।
সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নাহিদ ইসলাম এ প্রতিবাদ মিছিলের ঘোষণা দেন।
এদিকে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিকেল সোয়া ৪টার দিকে হটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগ।
এর আগে বিকেল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাবির বিজয় একাত্তর হল সংলগ্ন হলপাড়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। একপর্যায়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণে নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে গণমাধ্যমকর্মীসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে সরকারি চাকরিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কে রাজাকার কে রাজাকার, তুই রাজাকার তুই রাজাকার’, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র কারও বাপের না’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘আমার স্বাধীন বাংলায়, একের কথা চলে না’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারও বাপের না’ অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘হামলা-মামলা দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’ স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রসঙ্গত, রোববার (১৪ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে।’