পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সবজি চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষক। কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষন সহ কৃষি উপকরন পেয়ে পরিত্যক্ত জমি, পুকুর, জলাশয়ের পাড়ে জাল দিয়ে মাচা তৈরী করে উচ্চ ফলনশীন জাতের ডায়ানা লাউ চাষ করে আশানুরুপ ফলন পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে বিক্রী করে সাবলম্বী হতে শুরু করেছে একাধিক কৃষক। দরিদ্র এসব কৃষকের চোখে মুখে এখন দেখা মিলছে খুশির ঝিলিক।
সূত্র জানায়, উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের টিয়াখালী গ্রামের দরিদ্র কৃষক মো. সিদ্দিক হাওলাদার নিজের এক টুকরো জমিতে ধান চাষ করে ৪ সদস্যের পরিবারের ভরন পোষন যোগাতে না পারায় অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিকের কাজ করতেন। এতেও তার নুন আনতে পানতা ফুরানোর মত অবস্থা ছিল। অবশেষে কৃষি বিভাগের টিয়াখালী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি কৃষি বিভাগ থেকে সবজি চাষাবাদের প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। প্রশিক্ষন শেষে কৃষি উপকরন পেয়ে নিজের পরিত্যক্ত জমি, জলাশয়ের পাড়ে জাল দিয়ে মাচা তৈরী করে উচ্চ ফলনশীন জাতের ডায়ানা লাউ চাষ করেন। দু’এক মাস পেরোতেই তার জালের মাচা লাউয়ের সবুজ লতায় ভরে ওঠে। তখন থেকেই তিনি লাউয়ের লতা কেটে বাজারে মুঠি বেঁধে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রী শুরু করেন। দিনে দিনে লাউয়ের লতা থেকে নিচে ঝুলে পড়তে থাকে লাউয়ের কড়া। বিক্রী উপযোগী হয়ে উঠতেই তিনি লাউ কাটতে শুরু করেন। অত:পর প্রতি পিচ লাউ তিনি বাজারে বিক্রী করেন ৬০ টাকা দরে। স্থানীয় বাজারে তার তাজা লাউ শাক ও লাউয়ের কদর বাড়ায় পাইকাররা এসে বাড়ী থেকেই পাইকারী দরে নিতে শুরু করায় ধীরে ধীরে তার সাবলম্বী হওয়ার তথ্য ছড়িয়ে পড়তে থাকে গ্রাম জুড়ে। এতে অনেক কৃষক আগ্রহী হয়ে ওঠে উচ্চ ফলনশীল ডায়ানা লাউ চাষে।
কৃষক মো. সিদ্দিক হাওলাদার (৪৮) বলেন, ’পরিবারের ভরন পোষন মেটাতে ভীষন দু:শ্চিন্তায় দিন কাটতো আমার। একদিন কৃষি অফিসের এক স্যারের পরামর্শে অফিসে যাই। পরে তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষন সহ বিনামূল্যে ডায়ানা লাউয়ের বীজ পেয়ে ৫০ শতক জমিতে লাউয়ের বীজ লাগাই। বীজ থেকে চারা বেরোতে জাল দিয়ে মাচা তৈরী করি। এতে আমার ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। গত দু’মাসে আমি শাক ও লাউ বিক্রী করে ৬০-৬৫ হাজার টাকা লাভ করি। এখনও আমার মাচা ভরে আছে লাউ শাক ও লাউয়ের কড়ায়।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসেন বলেন, ’কৃষি বিভাগের এসএসিপি প্রদর্শনীর ডায়ানা লাউয়ের চাষ করে সিদ্দিক হাওলাদারের মত একাধিক কৃষক দারিদ্রতাকে দূর করতে পেরেছে। কৃষি অফিস থেকে আমরা সার্বক্ষনিক কৃষককে প্রশিক্ষন সহ পরামর্শ দিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। যাতে এক ইঞ্চি জমিও কারও অনাবাদী না থাকে। কৃষিতে সফলতা অর্জন করাই আমাদের লক্ষ্য।’
নিউজফ্ল্যাশ/ এইচ আর