নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আপনারা সুযোগ নিতে চান, খেলতে চান? আপনারা খেলবেন আমাদের সাথে? কবে খেলবেন বলেন, আমরাও খেলতে চাই। আপনারা ধ্বংসের পক্ষে, আমরা খেলবো ধ্বংসের বিপক্ষে। আপনারা খেলবেন সাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে, আমরা খেলবো অসাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে। ডেট দিন কবে খেলবেন। সারা বাংলাদেশে ঝামেলা করার দরকার কি। আসুন নারায়ণগঞ্জে খেলি। তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশে খেলছেন। সাহেব বলছি নয়ত যদি আবার উপর থেকে মারেন। মুসলমান একবার মরে, দুইবার মরে না। লন্ডন থেকে নির্দেশ আসছে আপনারা বাংলাদেশে বসে লাফাচ্ছেন। শনিবার ২৭ আগস্ট বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জের ২নং রেলগেট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে স্বাধীনতা বিরোধী, জঙ্গীবাদ ও আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মহানগর আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বাবু চন্দন শীলের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খোকন সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওয়াজেদ আলী খোকন, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মোহসিন প্রমুখ।
শামীম ওসমান বলেন, আমাদের রাজনীতি করার কথা ছিল না বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে। বঙ্গবন্ধু আর পনেরো বছর পেলে বাংলাদেশ জাপানের মত উন্নত দেশ থাকত। আপনারা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ করেন এটা বলব না। আমি বলব শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের স্বপ্ন না, শেখ হাসিনা আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশের ভবিষ্যত। গত ১৬ আগষ্ট জাতির জনকের কন্যা বলেছেন চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আরেকটি পঁচাত্তরের একুশে আগষ্টের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হচ্ছে। আপনাদের টার্গেট সরকার ফেলে দেয়া নয়, শেখ হাসিনাকে ফেলে দেয়া। কোকো মারা গেল। জাতির পিতার কণ্যা গেলেন তার বাসায় সহানুভূতি জানানোর জন্য। তাকে অপমান করা হল। আপনি আবারও বলছেন গণভবন পর্যন্ত আসলে চা খাওয়াবেন। এটা হতে পারে না। যারা আপনাকে হত্যার চেষ্টা করে যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সংসদে বসায়, বাংলার মানুষ চায়না আপনি তাদের চা খাওয়ান। আপনি গণতন্ত্রের কথা বলেন ওরা এটাকে দুর্বলতা ভাবে।
সামনে কঠিন সময় আসছে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ওরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায়। ওরা ওদের জায়গায় ঠিক আছে। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বিভক্ত। বলেছিলাম আমি স্লোগান দিব আপনারা বক্তৃতা দিয়েন। সবাই তো বুঝল না। অনেকেই বুঝে না বোঝার ভান করেন। তারা আমাদের হুমকি দেন। শেখ হাসিনাকে ২১বার মারার চেষ্টা করা হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী কত মানুষকে হত্যা-ধর্ষণ করা হয়েছে পত্রিকায় পাবেন। তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার।
তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, লন্ডন থেকে যিদি হুকুম দিচ্ছেন, ছেলে হয়ে তো আসলেন না বাংলাদেশে। বুকে কলজে নাই নাকি সাহস নাই? আপনি লন্ডনে আরামে থাকেন। যারা তার কথায় নাচছেন, তারা কি ভেবেছেন যারা মায়ের জন্য আসে না, আপনি বিপদে পড়লে সে কি আপনার জন্য আসবে?
নিজ দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে যারা আওয়ামী লীগ করেন। শেখ হাসিনার বদৌলতে বড় বড় পদ পেয়েছেন। আসুন মাঠে নামুন। ২০২৪ সালে জাতির পিতার কন্যা ক্ষমতায় আসলে আমাকে বলবেন আমি সরে যাবো। পদ পদবী আপনারা নিয়েন। তোলারাম কলেজের ভিপি ছিলাম। তখন নয়শ টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারিনি। আমার বড় ভাইকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই ঢাকার রাজপথ দখল করবেন। আমরা কি হাতে চুরি পড়ে বসে আছি। আমাদের মহিলারাই যথেষ্ট। হয়ত কিছু স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি মরবে। বাঁচব কীনা জানি না। কালকে নাও থাকতে পারি। যা করার করেন, ২০২৪ সালে শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।
আওয়ামী লীগে সব ভাল মানুষ না, খারাপ লোকও আছে। কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদের বুজুর্গ ইমামকে আওয়ামী লীগের পদবী ব্যবহার করে কটুক্তি করেছে। আমাকে ইমামরা প্রশ্ন করেছেন। আমি ইমামদের সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি, ক্ষমা করে দিবেন। অনেকেই ক্ষমা চাইতে শেখেনি।