সোমবার, ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এনবিআরে শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউনসহ’ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে আন্দোলনরত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

রোববার রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাকক্ষে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো রোববারও চলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি’।

হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে গত কয়েকদিনের কর্মসূচি এবং গতকাল ও আজ অর্থাৎ ২৮ এবং ২৯ জুন যে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি-রপ্তানি তথা দেশের অর্থনীতির যে অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনে দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্যোগ এবং আলোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই।

তিনি আরও বলেন, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে সরকার রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কারে যে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে তাকে ঐক্য পরিষদ স্বাগত জানায়। আমরা এই কমিটির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে টেকসই রাজস্ব সংস্কার করতে অবদান রাখতে পারব বলে আশা করি। এমতাবস্থায় দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং দেশের আমদানি-রপ্তানি ও সাপ্লাই চেইন সচল রাখা তথা অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ তাদের কমপ্লিট শাটডাউন প্রত্যাহার করেছে। তবে একটি পূর্ণাঙ্গ এবং টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারে আমাদের উদ্যোগ ও কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।

বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীরা এনবিআরের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আজ সারাদিন বৈঠক করে তাদের দাবিগুলো বোঝার চেষ্টা করেন। এরপর তারা অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। এরপর তারা মোটামুটিভাবে আশ্বস্ত করতে পেরেছেন, শাটডাউনে যাওয়ার মতো তেমন কোনো যৌক্তিক কারণ ছিল না। কিন্তু কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য এ রকম একটি বিপর্যয় আমাদের সবাইকে দেখতে হয়েছে।

তিনি বলেন, যৌক্তিক আইন যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকার আবার বসবে। প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা মধ্যস্থতা করবে। আন্দোলনকারীদের দাবি তারাও এনবিআরের পৃথক চান, কিন্তু এটা যেন সব অংশীজনদের একত্রে করে আলোচনার ভিত্তিতে একটা সুন্দর সংস্কার হয়। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারও আমাদের আশ্বস্ত করেছে। বিষয়টি ব্যবসায়ীরাও আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছে। এ ক্ষেত্রে কিছুটা হয়রানিমূলক ঘটনা ঘটতে পারে, সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আগামীতে যে বিষয়টি নিয়ে কোনো সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করা হবে।

এর আগে এদিন সন্ধ্যায় অর্থ উপদেষ্টা অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে এই ইস্যুতে বৈঠক করেন ১১ সদস্যের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, আইসিসিবির সহসভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, মেট্রোপলিটন চেম্বারের (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, এমসিসিআইর সহসভাপতি ও ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও সিমিন রহমান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতির তাসকিন আহমেদ প্রমুখ। বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ