র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবান নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
র্যাব ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, ‘র্যাব যখন তৈরি হয় তখন আমেরিকা, যুক্তরাজ্যের পরামর্শেই তৈরি হয়। তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঐ দেশগুলো র্যাবের কনসেপ্টটা দেয়। তারাই তৎকালীন সরকারকে এরজন্য ইকুয়েপমেন্ট দেয়। তাদের কারণেই প্রাথমিকভাবে র্যাব চালু হয়। সময়ের সাথে সাথে র্যাব এখন অনেক পরিপক্ব। দেশের জনগণ পারফরম্যান্সের জন্য তাদের চায়। আমেরিকা অন্য বুদ্ধিতে তাদের ওপর প্রেশার দিয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করব।’
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুরের ঢাকা সফরে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি জানি না এটা। আমাদের একটা অনুরোধ থাকবে তাদের প্রতি যে তাদের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করতে চায়। ৭০ এর নির্বাচনসহ পরবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। কোনো বুলেটের মাধ্যমে আসে নাই, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যলটের মাধ্যমে আসে। আমরা ব্যালট যাতে স্বচ্ছ হয় সেজন্য স্বচ্ছ ভোট বাক্স তৈরি করেছি, যাতে বাহিরে থেকে দেখা যায়। আমরা নকল ভোটার এড়ানোর জন্য আইডি করেছি।
কেননা কোনো এক সময় সরকার এক কোটি ২৩ লক্ষ ফেইক ভোটার পেয়েছিলো, আমরা সেজন্য বায়োমেট্রিক ছবিসহ আইডি তৈরি করেছি, যাতে এই ধরনের কোনো ঝামেলা না হয়। এখন আমরা তৈরি করেছি একটি নিরপেক্ষ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আমাদের মৌলিক উদ্দেশ্য আমরা একটি স্বচ্ছ, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই।’
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তিনি আরো বলেন, আমাদের পজিশন খুব ক্লিয়ার। আওয়ামী লীগ সবসময় সঠিক সময়ে নির্বাচন দেয়। আগেও করেছে, ২০০১ সালেও করে নাই? একসাথে হারার পরে সুন্দর ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। অন্য দল করেছে? বিএনপি করেছে? আওয়ামী লীগ সেই দল না যে একদেশে একটা বড় পার্টিকে নির্বাচন করতেই দিলো না, মনে করেন মিশরের কাহিনি বলছি। মনে করেন এই মায়ানমার বড় দলকে তারা ভোটের অধিকারই দেয় নাই। বাংলাদেশ এইটা না। বাংলাদেশ হচ্ছে সবাইকে নিয়ে আমরা থাকতে চাই। এদেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে এদেশের জনগণের ওপর। এদেশের নির্বাচন ভালো না মন্দ হবে সেটা নির্ভর করে এদেশের সকল পার্টির ওপর।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের কোনো অস্বস্তির বিষয় সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কোনো অস্বস্তি নেই। অন্যরা যদি পরামর্শ দেয় তা যদি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে তা আমরা গ্রহণ করব। আর পরামর্শ দিলেই তো হবে না, বাস্তবায়নও একটা বড় বিষয়। আমরা বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিব।