সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কেটে মাটি নিচ্ছ ইটভাটায়

আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সেকান্দারখালী গ্রামের পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের মাটি কেটে ইট ভাটায় নেয়া হয়েছে। এমএমএইচ ইটভাটার মালিক হানিফ মিয়া ও তার সহয্রোগীরা এ মাটি কেটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি প্রবেশ করবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এতে আমতলী সদর ইউনিয়নের অন্তত ২৫/৩০ হাজার মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।

এছাড়া ভাটা সংলগ্ন কড়াইবনিয়া খাল বন্ধ ও কালভার্টের মুখ মাটি দিয়ে আটকে দেয়ায় পানি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বরি ফসল ও বোরো ধান আবাদ ব্যপক হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানান কৃষকরা।

জানাগেছে, আমতলী উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়নের সেকান্দারখালী গ্রামের পাউবোর ৪৩/১-এ পোল্ডারের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের পাশে বাউফলের মোঃ হানিফ মিয়া নামের এক ব্যাক্তি গত বছর নভেম্বর মাসে এমএমএইচ নামের ইটভাটা নির্মাণ করে। কাজের শুরুতেই ভাটা সংলগ্ন পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের মাটি কেটে ভাটায় তিনি নিয়ে যায়। বাঁধের ঢাল থেকে ৮/১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটায় বাঁধ ভেঙ্গে নিচে পড়ে যাচ্ছে । ওই বাঁধের ঢালের মাটি কাটায় বাঁধটি অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ হানিফ মিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মধ্যে রয়েছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি প্রবেশ করবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসাী। এতে সদর ইউনিয়নের অন্তত ২৫/৩০ হাজার মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়াও ভাটার মালিক হানিফ মিয়া ভাটা সংলগ্ন প্রবাহমান কড়াইবুনিয়া খাল আটকে ইটভাটা নিমাাণ করেছেন । এতে ওই খাল দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে ইটভাটার সামনে আমতলী-কলাপাড়া মহাসড়কের উপর নির্মিত কালভার্টের মুখ আটকে ইটভাটার মাটি রেখেছেন তিনি। ফলে কালভার্ট দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এতে বরি ফসল ও বোরো ধানের আবাদ ব্যপক হুমকির মুখে পরেছে বলে জানান কৃষক ইদ্রিস মোল্লা। কৃষক শাহ আলম বলেন, কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ায় বোরো ধান চাষে ক্ষেতে পানি উঠাতে পারছি না। দ্রুত কালভার্টের মুখ খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন কৃষকরা।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, সেকান্দারখালী ৪৩/১ পোল্ডারের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের মাটি কেটে এমএমএইচ ইটভাটায় নিয়ে গেছে। বাঁধের ঢাল থেকে ৮/১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটায় বাঁধ ভেঙ্গে নিচে পরছে। কড়াইবুনিয়া খাল আটকে দেয়ায় পানি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমতলী-কলাপাড়া মহাসড়কের উপরে নির্মিত এমএমএইচ ইটভাটা সংলগ্ন কালভার্টের মুখ বন্ধ করে মাটি রাখা হয়েছে। এতে ওই কালভার্ট দিয়ে এক ফোটা পানি চলাচল করছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভাটার কয়েকজন শ্রমিক বলেন, মালিকের নির্দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের মাটি কেটেছি। তারা আরো বলেন, মাটি রাখায় কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় শামীমসহ কয়েকজন বলেন, বাঁধের মাটি কাটতে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু শ্রমিকরা তা শুনেনি।

আমতলী-কলাপাড়া মহাসড়ক সংলগ্ন সেকান্দারখালী গ্রামের এমএমএইচ ইটভাটার মালিক হানিফ মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জেনেই তিনি পরে কথা হবে বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মোঃ আজিজুল ইসলাম সুজন বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ