এক কিশোরীকে তিন বখাটে অপহরণ শেষে পালাক্রমে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই নাঈম, বেল্লাল ও নয়ন নামের তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে আমতলী উপজেলার চাওড়া লোচা গ্রামে।
জানাগেছে, উপজেলার চাওড়া কালিবাড়ী গ্রামের এক কিশোরী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বাসার সামনে ঘুরাঘুরি করতেছিল। ওই সময় তিন বখাটে নাঈম, বেল্লাল ও নয়ন কিশোরীর চোখ বেঁধে অপহরণ করে যায়। পরে তারা পার্শ্ববর্তী লোচা এলাকার মাঠে মুগডালের খেতে নিয়ে তাকে হাত-পা বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ওই কিশোরীর মা আমতলী থানা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপুর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে পুলিশ গণধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নাঈম, বেল্লাল ও নয়নকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় এদের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় গণধর্ষণ আইনে মামলা হয়েছে। শুক্রবার পুলিশ বিকেলে তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ গণধর্ষণের শিকার কিশোরীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করেছে।
গণ ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী বলেন, আমি বাসার সামনে ঘুরাঘুরি করতেছিলাম এমন মুহুর্তে নাঈম, বেল্লাল ও নয়ন এসে আমার চোখ বেঁধে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তারা আমাকে পার্শ্ববর্তী একটি মুগডালের খেতে নিয়ে হাত পা বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। আমি অনেক অনুনয় বিনয় করেও তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাইনি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
কিশোরীর মা বলেন, আমার মেয়েকে বাসার সামনে থেকে তিন বখাটে এসে অপহরণ করে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে। আমি ওই বখাটের শাস্তি দাবী করছি।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক চাওড়া ইউনিয়নের লোচা গ্রামে অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণের শিকার কিশোরীকে উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছি। এ ঘটনার তাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ আইনে মামলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আসামী নাঈম, বেল্লাল ও নয়নকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আমতলীতে দুই্ ইউপি সদস্যসহ চার জুয়ারী গ্রেপ্তার
আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দুই ইউপি সদস্য সোলেমান মৃধা, আব্দুল বাতেন দেওয়ানসহ চার জুয়ারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গাজীপুর বন্দর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার তাদের বিরুদ্ধে জুয়া আইনে মামলা হয়েছে। শুক্রবার পুলিশ তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের প্রেরন করেছে। আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোলেমান মৃধা ও ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন দেওয়ান গত কয়েক বছর ধরে এলাকায় জুয়ার দল গঠন করে জুয়া খেলে আসছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গাজীপুর বন্দরের একটি ঘরে ইউপি সদস্য সোলেমান মৃধা ও আব্দুল বাতেন দেওয়ানসহ ৮/১০ জনে জুয়া খেলছিল। গোপর সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই ঘর থেকে সোলেমান মৃধা ও আব্দুল বাতেন দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্য জুয়ারীরা পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। পরে ইউসুফ ও আব্দুল আউয়াল নামের আরো দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তাদের কাছে থাকা তাস ও নগদ টাকা জব্দ করে। এ ঘটনায় আমতলী থানায় ইউপি সদস্য সোলেমানকে প্রধান আসামী করে চারজনের বিরুদ্ধে জুয়া আইনে মামলা হয়েছে। শুক্রবার পুলিশ তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। ওইদিন বিকেলে আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন দেওয়ান জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে তারিকাটা সাকুরা পরিবহন গাড়ী পোড়ানো মামলার ৫৮ নং এজাহারভুক্ত আসামী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ইউপি সদস্য সোলেমান মৃধা ও আব্দুল বাতেন এলাকায় জুয়াসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, দুই ইউপি সদস্যসহ চার জুয়ারীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
শোক সংবাদ
দৈনিক সমকাল পত্রিকার আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ জাকির হোসেন মোল্লার মাতা জাহানারা বেগম বৃহস্পতিবার রাতে আমতলী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের সবুজবাগের বাসায় বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুরবণ করেছেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি পাঁচ ছেলে ও এক কন্যা সন্তানসহ বহু আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। শুক্রবার বেলা ১০ ঘটিকায় মরহুমের জানাযা নামাজ শেষে হলদিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।