ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পেরিস সিটিতে উদ্বোধন করা হলো স্থায়ী শহিদ মিনার । বাংলাদেশের কেন্দ্রিয় শহিদ মিনারের আদলে নির্মিত শহিদ মিনারটি আজ উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পেরিস সিটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির নিরলস প্রচেষ্টা, পেরিস সিটি মেয়রের ঐকান্তিক উদ্যোগ এ শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। মহতী এ উদ্যোগের সাথে পরবর্তীতে লস এঞ্জেলেস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট সম্পৃক্ত হয় । এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট, পেরিস সিটি ও আইএমএলডিসির যৌথ আয়োজনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন সবাইকে সাথে নিয়ে নবনির্মিত শহিদ মিনার উদ্বোধন করেন এবং শহিদ বেদিতে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেন। এ সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সকল ভাষা শহিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলসহ বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেল, স্থানীয় কাউন্সিল মেম্বার, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কনস্যুলেটএর কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশ কমিউনিটি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ অন্যান্য ভাষা শহিদদের অবদানের ইতিহাস তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বাংলাদেশের কেন্দ্রিয় শহিদ মিনারের নকশাতে এ শহিদ মিনার নির্মাণে সহযোগিতার জন্য তিনি সিটি মেয়রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
পেরিসবাসী প্রবাসী বাংলাদেশী যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পেরিস সিটিতে এমন একটি স্থাপত্য নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁদের এ উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি শহরের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বাংলায় বক্তব্য প্রদান করে বাংলাকে প্রথম বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালে ‘জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা’ (ইউনেস্কো) ২১ ফেব্রুয়ারিকে সারা বিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের স্বীকৃতি প্রদান করে।
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত শহীদ মিনারটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে সিটি হল ও স্থানীয় লাইব্রেরির সামনে স্থাপিত হওয়ায় তা ইতোমধ্যে স্থানীয়দের দৃষ্টি কেড়েছে।
এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রী লস এঞ্জেলেস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, সিটি লাইব্রেরি ও IMLDC উদ্যোগে শহিদ মিনারের পার্শ্ববর্তী কেন্দ্রিয় পাঠাগারে ‘বাংলাদেশ কর্নার’ উদ্বোধন করেন।