আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর যে ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা এখন সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন, তাদের অবশ্যই আদালতে আনতে হবে। আদালতে তাদের বিচার হবে।
রোববার (১২ অক্টোবর) ১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়ে সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনের এক দিন পর ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন তাজুল ইসলাম।
তাজুল ইসলাম বলেন, সেনাসদর সংবাদ সম্মেলন করলেও বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাইব্যুনালকে জানানো হয়নি। আমাদের কাছে যেহেতু আনুষ্ঠানিকভাবে ডকুমেন্টারি পদ্ধতিতে কেউ বলেননি যে আটক রাখা হয়েছে, মিডিয়াতে যেটা এসেছে, আমরা সেটা আমলে নিচ্ছি না। যেহেতু আমরা জানি না, তাই এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করব না। আমাদের যদি বলা হয় যে আটক রাখা হয়েছে, তাহলে আইন অনুযায়ী তাকে অবশ্যই আদালতের কাছে আনতে হবে। এটাই বিধান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ২৫ কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন এখনও সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন। তাদের মধ্যে একজন বাদে বাকি ১৪ জনকে এবং অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) থাকা একজনকে হেফাজতে নেওয়ার কথা গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।
১৫ জন সেনা কর্মকর্তা যে সেনাবাহিনীর হেফাজতে আছেন, তাদের স্ট্যাটাস কী হবে? তারা কি এখন গ্রেপ্তার? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, সংবিধানে আছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের আইনেও আছে, ফৌজদারি কার্যবিধিতেও আছে যে যেখানেই গ্রেপ্তার করা হোক, তাকে আদালতের জন্য যতটুকু সময় ব্যয় হবে, সেটুকু ছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থিত করতে হবে। এটা হচ্ছে আইনের বিধান।
এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন নয়, সংবিধানেও এটি স্বীকৃত যে গ্রেপ্তার করে ২৪ ঘণ্টার বেশি কাউকে আটক রাখা যায় না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যদি আদালত আপনাকে আটক করার অথরিটি দেন, তাহলে কেবল তখনই আটক করতে পারবেন। যাকে যখনই গ্রেপ্তার করা হবে, আদালতের বিধান হচ্ছে, তখনই তাকে আদালতে আনতে হবে। আদালত তাকে আটক রাখতে বললে আটক রাখা হবে। আদালত তাকে জামিন দিয়ে ছেড়ে দিতে পারেন। সুতরাং সিদ্ধান্ত নেওয়ার কর্তৃত্ব (অথরিটি) তখন আদালতের কাছে চলে যায়। এটাই হচ্ছে আইনি ব্যাখ্যা।