পেটে ও বুকে জোড়া লাগানো আড়াই মাস বয়সী শিশু আবু বকর ও ওমর ফারুককে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়েছে। অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের অপারেশন থিয়েটারে এই অস্ত্রোপচার করা হয়। শিশু দুটির শারীরিক অবস্থা সংকটমুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আবু বকর ও ওমর ফারুক গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আল আমিন ও চায়না বেগম দম্পতির সন্তান।
৪ জুলাই তাদের জন্ম হয়। শরীরিক জটিলতার কারণে পরদিন তাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহিদ হোসেনের অধীনে ২০১ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল আবু বকর ও ওমর ফারুকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বুধবার সকালে তাদের শরীরে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন।
শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. কে এম সাইফুল ইসলাম, মেডিক্যাল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা দিলশান মুনমুন এবং নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বণিক এবং নার্সিং ইনচার্জ মেহেরুন্নেসাসহ অন্য চিকিৎসকগণ এই জটিল অস্ত্রোপচারে অংশ নেন।
আবু বকর ও ওমর ফারুকের লিভার ও বুকের হাড় সংযুক্ত ছিল। পোস্ট-অপারেটিভে এ দুই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদলের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে। শিশু দুটির শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত সংকটমুক্ত। শিশু দুটির মা-বাবা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল তাদের পূর্ণ সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
জটিল অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ অস্ত্রোপচার সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও নার্সকে ধন্যবাদ জানান।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের সার্জনরা এ ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং এ রকম জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমনের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। স্বল্প খরচে দেশের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধাতেই বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব।’
উপচার্য জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থায়নে এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।