শেখ হাসিনার পক্ষে আদালতে আইনি লড়াইয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যে আদালতের প্রতি শেখ হাসিনার আস্থা নেই সেই আদালতে আমি তাকে ডিফেন্ড করতে পারি না।’
আদালতে নির্বিঘ্নে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার বিষয়েও নিজের মতামত তুলে ধরেন এই আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী। তিনি বলেন, আদালতে যদি আমি প্রোপার ওয়েতে, নির্বিঘ্নে ডিফেন্ড করতে না পারি তা হলে তো সেখানে আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত হয়ে কোনো লাভ নেই।
তবে দুদকের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পক্ষে আইনি লড়াই করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে আইনজীবী হতে ১২ আগস্ট আবেদন করেছিলেন জেড আই খান পান্না। তাঁর পক্ষে আইনজীবী নাজনীন নাহার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আবেদনটি দাখিল করেছিলেন। ২৫ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পিপি আইনজীবী আমির হোসেনকে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। তিনি এরই মধ্যে কয়েকদিন শেখ হাসিনার পক্ষে শুনানি করেছেন। এ কারণে ট্রাইব্যুনাল জেড আই পান্নার আবেদন আমলে নেননি।
তবে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন- ‘উনার (জেড আই খান পান্না) একটা বায়োডাটা দিয়ে যেতে পারেন অন্য কোনো মামলায় তাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা আমরা পরবর্তীতে চিন্তা করব।’ এ পর্যায় ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর স্টেশন মাস্টারকে বলে ট্রেনে ওঠার সুযোগ নেই।
এরপর ২৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-খুন-অপহরণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রাষ্ট্র নিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী হিসেবে তাঁকে এ নিয়োগ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্য হলেন- বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
নিয়োগ পাওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে আইনজীবী জেড আই খান পান্না সাংবাদিকদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার পক্ষে মামলার পরিচালনার জন্য প্রোপার ডিফেন্স টিম দরকার। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। একাত্তর সালে যুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, তাঁর আহ্বানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। আমার মনে হয়েছে, তার কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা পরিচালনার জন্য আরও প্রোপার ডিফেন্স দরকার।
জেডআই খান পান্না বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন ও একজন মানবাধিকার কর্মী।







