জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ইতিমধ্যে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে দলীয়করণে অভিযোগ উঠেছে। কে বিএনপির লোক, আর কে জামায়াতের লোক দেখা হচ্ছে। সেভাবেই লোকজন বসানো হচ্ছে। এরকম একটি দলীয় প্রশাসনের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন কিভাবে হবে?
শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে জাতীয় পার্টির সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ২০২৪ সালে একতরফা নির্বাচন হওয়ায় মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। আগামীতে এ ধরনের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হলে এবারও মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, হিটলার মুসোলিনিও নির্বাচিত শাসক ছিলেন। কিন্তু তারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। যা কিছুদিন আগেও আমরা বাংলাদেশ দেখেছি। যার কারণে ৫ আগস্টের ছাত্র জনতার বিপ্লব। তাই আবারও যদি একতরফা নির্বাচন হয় তাহলে হিটলার-মুসোলিনির মতো দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম হবে।
‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় ঐক্য খুবই জরুরি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা।
ব্যারিস্টার আনিস বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংস্কার হয়েছিল ১৯৯১ সালে। রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থা থেকে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় বাংলাদেশ যে যাত্রা শুরু করে সেটা সংসদে পাশ হয়েছিল। অতএব আজকে যারা সংস্কার সংস্কার করছেন, সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সংসদ লাগবে।
তিনি বলেন, আজকে যারা জাতীয় পার্টিকে দোসর হিসেবে চিহ্নিত করতে চান তারাও এক সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন করেছে। এমনকি তারা সংসদে ছিলেন। ২০০৮ সালে আমরা যেমন আওয়ামী লীগ সঙ্গে জোট গঠন করেছি, ঠিক তেমনি ১৪ সালের নির্বাচনের আগে আমরা বিএনপির সঙ্গে জোট গঠন করার জন্য একাধিক বৈঠক করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনাগ্রহের কারণে সেই জোট গঠন হয়নি। আমি বারবার বলেছি, জাতীয় পার্টি কোনো বিপ্লবী পার্টি নয়। জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনের কৌশল হিসেবে জাতীয় পার্টির একটি জোট করে। নির্বাচিত হয়ে সংসদে যায়। আজকে যেমন জামায়াত, হেফাজত, ইসলামী আন্দোলন এধরনের জোট গঠনের চেষ্টা করছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টিও জোট গঠন করেছিল। জোট গঠন করা যদি দোষ হয় সে দোষে বাংলাদেশের অধিকাংশ সব দল দোষী।
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আজ জামায়াত আমাদের নিষিদ্ধের দাবি করছে। কিন্তু আমরা কখনো জামায়াত ইসলামাকে নিষিদ্ধের দাবি জানায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে জাতীয় পার্টি তার বিরোধিতা করেছিল। আমরা মনে করি কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। অথচ দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে সেই জামায়াতে ইসলামী জাতীয় পার্টিতে নিষিদ্ধ করতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়ার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য-নাসরিন জাহান রতনা, নাজমা আকতার,মাসরুর মওলা,জসিম উদ্দিন ভুইয়া, আরিফুর রহমান খান, সরদার শাহজাহান, নূরুল ইসলাম মিলন, মোবারক হোসেন আজাদ, মো. বেলাল হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক প্রমুখ।