নিরীক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতায় দেশ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা পাচার সহজ হয়েছে বলে মনে করে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, ভালো নিরীক্ষা ব্যবস্থা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে অর্থ পাচার এড়ানো যেত। তাছাড়া ব্যাংকগুলোর লাখ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের দায়ও নিরীক্ষকরা এড়াতে পারেন না।
আইসিএমএবি আয়োজিত ‘অডিট আওতা সম্প্রসারণে সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটি সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সেলিম, মো. দেলোয়ার হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. কাউসার আলম , সেক্রেটারি হাসনাইন তৌফিক আহমেদ, কাউন্সিল সদস্য মো. আখতারুজ্জামান, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে আইসিএমএবি সভাপতি বলেন, দেশের অডিট বা নিরীক্ষা প্রতিবেদন ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগেই দেশের ব্যাংক আর্থিক খাত ও পুঁজিবাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সহজ হয়। নিম্নমানের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের কারণেই পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। একই কারণে দেশি ভালো প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে ভয় পায়।
তিনি বলেন, বিগত দেড় দশকের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের নিরীক্ষা ইকোসিস্টেম সম্পূর্ণরূপে অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যার বিরূপ পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। আনুমানিক ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নিম্নমানের নিরীক্ষা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করেছে। যার ফলে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মানসম্মত নিরীক্ষা হলে দেশের খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত না।
এ সময় জানানো হয়, বাংলাদেশে নিরীক্ষা করতে পারে এমন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সংখ্যা মাত্র প্রায় দুই হাজার পাঁচ। যেখানে নেপালে তা ৯ হাজার, পাকিস্তানে ১০ হাজারের বেশি। এ অবস্থায় কোম্পানি আইনে যেসব প্রতিষ্ঠানে সিএ ও সিএমএ প্রতিষ্ঠান অডিট বা নিরীক্ষা করে না সেসব প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষা করার সুযোগ দাবি করে আইসিএমএবি। এজন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ও ফাইনান্স অর্ডিন্যান্সে আইসিএমএবির অধিকার অন্তর্ভুক্ত করারও জোর দাবি জানানো হয়।