বুধবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মেঘনা আলমকে আটকের প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি : আইন উপদেষ্টা

মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, তা সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

আজ রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে বলে উল্লেখ করেন ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব শিগগির উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের ডিটেনশন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আপনাদের শুধু একটি জিনিস বলতে চাই, আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ নিয়ে মিটিং করেছি। আমরা এ ব্যাপারে বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান এবং অন্য অনেকের বক্তব্যের বিষয়ে সচেতন আছি।’

এদিকে মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মডেল ও মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মেঘনা আলমের বাবার আনা রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদির সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করবেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।

আজকের আদেশের বিষয়ে আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রিটের বিবাদীদের (রেসপনডেন্ট) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’

গত বুধবার রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে ৩০ দিন কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, ক্ষতিকর কাজ থেকে নিবৃত্ত রাখার জন্য সরকার যেকোনো ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দিতে পারবেন। আবার এই আইনের ৩(২) ধারা অনুযায়ী, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যদি সন্তুষ্ট হন এই আইনের নির্দিষ্ট ধারার ক্ষতিকর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তাহলে ওই ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দেবেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনের যেসব ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে আটক আদেশ দেওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বা প্রতিরক্ষার ক্ষতি করা, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সংরক্ষণের ক্ষতি করা, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বা জননিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ক্ষতি করা, বিভিন্ন সম্প্রদায়, শ্রেণি বা গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণাবোধ বা উত্তেজনা সৃষ্টি করা, আইনের শাসন বা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা বা উৎসাহ প্রদান করা বা উত্তেজিত করা। এই আইন অনুযায়ী ক্ষতিকর আরও কাজ হচ্ছে জনসাধারণের জন্য অত্যাবশ্যক সেবা বা অত্যাবশ্যক দ্রব্যাদি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করা, জনসাধারণ বা কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি বা আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বা আর্থিক ক্ষতি করা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ