জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ৪ দিনের সফরে আজ বিকালে ঢাকায় আসছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে তিনি এই সফর করছেন। মূল এজেন্ডা রোহিঙ্গা সংকট হলেও বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বার্তাও থাকতে পারে।
রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশি সাহায্য কমে যাওয়া, সেপ্টেম্বরে ঢাকায় রোহিঙ্গাসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠান, আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত জাতিগত নিধন ও গণহত্যার বিচার এবং প্রত্যাবাসনের মতো ইস্যু এই সফরকালে প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মহাসচিব গুতেরেস বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজে বিশ্বাসী। তাই তিনি পবিত্র রমজান মাসে মুসলমানদের মতো রোজা পালন করবেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে এক লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানের সঙ্গে তিনি এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইফতার করবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও আলোকপাত করতে পারেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
এ বিষয়ে কী বার্তা তিনি দেবেন সেটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। শনিবার সিভিল সোসাইটির সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকটিকে তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া আন্তর্জাতিক মহলের প্রত্যাশা। গুতেরেস একই প্রত্যাশার কথা বলতে পারেন বলে ধারণা করা যায়। এ বিষয়ে জাতিসংঘ থেকে কারিগরি সহযোগিতার আশ্বাস দিতে পারেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তাদের প্রতিবেদনে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে প্রায় ১৪০০ মানুষ মারা যাওয়ার তথ্য দিয়েছে। ফলে এমন হত্যাকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতার প্রসঙ্গও আনতে পারেন জাতিসংঘ প্রধান। এ ছাড়া অনেক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তিনি।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে আলোকপাত করেন। প্রেস সচিব বলেন, সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন। সফরকালে গুতেরেস রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতা, যুব প্রতিনিধি ও নারীদের সঙ্গে তিনটি পৃথক বৈঠকে অংশ নেবেন।
মিয়ানমারের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী উদ্যোগ নেবে? জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গারা যাতে ফেরত যেতে পারে সে জন্য সরকার কাজ করছে। আমাদের কূটনীতিক তৎপরতা আছে।’ শফিকুল আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টিকে বিশ্ব মানচিত্রে অগ্রাধিকারের জায়গায় নিয়ে আসতে চান প্রধান উপদেষ্টা।’
এই সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পেলেও সংস্কার ও আগামী নির্বাচন ইস্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিব ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানানো হয়। উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘বিকাল ৫টায় বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবেন জাতিসংঘের মহাসচিব।