বৃহস্পতিবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তারেক রহমান-বাবরসহ সব আসামি খালাসের কারণ জানালেন আইনজীবীরা

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ মৃত্যুদণ্ড-যাবজ্জীবন পাওয়া সব আসামিকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট।

রোববার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলার রায় দেন। এদিন রায় ঘোষণা উপলক্ষ্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের আদালতে উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল এজলাস। বেলা ১১টায় রায় ঘোষণা শুরু করেন হাইকোর্ট।

রায় ঘোষণার পর বিএনপির আইনজীবীরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছিল।

সব আসামি খালাস পাওয়ার বিষয়ে আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, এ মামলায় বিচারিক আদালতে ভুলভাবে জাজমেন্ট দেওয়া হয়েছে। কেননা প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে রাজনৈতিকভাবে আসামি করা হয়েছে। এতে করে প্রকৃত আসামিরা সুযোগ পেয়ে মামলার আসামি তালিকা থেকে বেরিয়ে গেছে। তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টুসহ যাদের আসামি করা হয়, তাদেরকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে করা হয়েছে। এটি কোনো সরকারের জন্য উচিত নয়। ফৌজদারী মামলায় একশ আসামি খালাস পেলেও ভুলভাবে একজনকেও সাজা দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারা নিহত ও আহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে উচিত ছিল প্রকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া। তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে নিয়ে আসা।রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, সাক্ষীরা ঘটনার বর্ণনা করছেন, কিন্তু কে গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছেন, তা কোনো সাক্ষী বলেননি। এ ছাড়া ২১ আগস্টে কে গ্রেনেড সরবরাহ করেছে, তা চার্জশিটে উল্লেখ করেননি কোনো তদন্ত কর্মকর্তা।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বিচারিক আদালতের বিচারটা অবৈধ বলা হয়েছে রায়ে। আইনের ভিত্তিতে বিচারটা হয়নি। কোনো সাক্ষীর সঙ্গে কোনো সাক্ষীর বক্তব্যে মিল নেই। শোনা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে রায় দেওয়া হয়েছে। আপিল মঞ্জুর করে ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ মামলায় বিএনপির অন্যতম আইনজীবী এবং দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বলেছেন, ‘এই মামলায় মোট চারটি চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। প্রথম তিনটি চার্জ শিটে তারেক রহমানের নাম ছিল না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর চতুর্থ চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।’

তিনি বলেন, ‘আজ প্রমাণিত হয়েছে এই চার্জশিট আইন বহির্ভূত ছিল। তাই এই চার্জশিটে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল তারা এ মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, যারা এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন এবং আপিল করেছেন বা আপিল করেননি সবাইকে এই মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘এভাবে তারেক রহমান ন্যয়বিচার পেয়েছেন; আজ প্রমাণিত হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমানকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল, সেই মামলায় আইনগতভাবে মোকাবিলার মাধ্যমে তিনি আজ বেকসুর খালাস পেয়েছেন।’

‘বিচারককে অবৈধ’ বলার কারণ হিসেবে বিএনপির সিনিয়র আইনীজীবীদের অন্যতম দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘২১ আগস্টে বিরোধী দল আওয়ামী লীগকে জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল পাশের একটি ময়দানে। কিন্তু তারা সরকারকে না জানিয়ে স্থান পরিবর্তন করে রাস্তার মধ্যে সমাবেশ করেন। এটা ছিল উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং তৎকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য তিনি (শেখ হাসিনা) এই কাজটি করেছেন। এই গ্রেনেড হামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ