বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে হওয়া মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর (৩৮) জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার নাগাদ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বরূপ কান্তি নাথ সাংবাদিকদের জানান, অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জন্য জামিন আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
তিনি জানান, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর পক্ষের আইনজীবীরা ধর্মীয় রীতিনীতি পালন, খাদ্য অভ্যাস অনুযায়ী খাবার প্রদান, কারাগারে চিকিৎসা ও কারাগারে ডিভিশনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তিনটি আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন অজয় দত্ত (৩৪), লীলা রাজ দাস ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাস (৩৮), কথক দাস (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাস (৩৮), রাজীব দাস (৩২), কৃষ্ণ কুমার দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে (৩৮), তুষার চক্রবর্তী (২৮), মিথুন দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাস (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ চৌধুরী (২৮), হৃদয় দাস (২৫)।
আজ বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে (৩৮) সকাল ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ সশরীরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করেন।
এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, যা এখনো সেখানে রয়েছে। ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেন। ওই দিন চন্দন কুমার ধরসহ ৯ জন আসামির ইন্ধনে বাকি আসামিরা নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করে দেন। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।