ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের হত্যার তদন্তের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) জাতিসংঘ কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল ঢাকায় আসবে। তারা প্রাথমিকভাবে তথ্যানুসন্ধানের কাজ করবে।
বুধবার (২১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জাতিসংঘের জেনেভা মিশন থেকে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসছে।
দলটি আগামী বুধবার পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবে। কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলের সফরের পর পরবর্তীতে ঢাকায় আসবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। সেই টিমই চূড়ান্তভাবে হত্যার তদন্ত করবে।
কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলটি মূলত চূড়ান্তভাবে তদন্তের জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করবে। পরবর্তীতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন চূড়ান্তভাবে তদন্তের কাজটি করবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এর আগেও জানিয়েছিলেন, আন্দোলনে হতাহতের ঘটনা তদন্তের স্বার্থে জাতিসংঘকে সহায়তা করতে প্রস্তুত অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের চাওয়া একটা নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। এ সরকারের অবস্থান খুবই পরিষ্কার ও স্বচ্ছ। যারা এ অপরাধগুলো করেছে এবং যারা হুকুম দিয়েছে তাদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং এ কাজে জাতিসংঘ সহায়তা করুক, এটা নিয়ে আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে।
ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস জানিয়েছেন, জাতিসংঘের কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল এসে প্রাথমিক তদন্তের কাজ করবে। তাদের ম্যান্ডেট (রাজনীতি) কী হবে, কীভাবে তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করবেন, এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে। প্রতিনিধিদল প্রাথমিক তদন্তের কাজের পাশাপাশি তাদের টার্মস অব রেফারেন্স (কাজের পরিধি), কাজের সময়সীমাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করে তা চূড়ান্ত করবে।
গত ১৬ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক এক বিবৃতিতে এ সপ্তাহেই জাতিসংঘের দলটির ঢাকা সফরের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারকে কোন কোন খাতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তর সহযোগিতা করবে সেই খাতগুলো চিহ্নিত করা এ সফরের লক্ষ্য। এ ছাড়া বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ের সহিংসতা ও অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্তের পদ্ধতিগুলো নিয়েও তারা আলোচনা করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপেও এ বিষয়ে আলোচনা করেন ভলকার টার্ক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৬৩০ জনেরও বেশি ছাত্র-জনতা মারা গেছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এসব লোক নিহত হওয়ার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করবে জাতিসংঘ।