সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসার আর কোনও সুযোগ আর নেই বলে মন্তব্যে করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পার হয়ে গেছে বললেন তিনি। সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপের বিষয়ে আজ শনিবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৯ জুলাই আমরা কারফিউ ভঙ্গ করে শাটডাউন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমাদের সে বক্তব্য কোনও মিডিয়ায় প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। সে রাতে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম অত্যাচার করা হয় এ ঘোষণার জন্য এবং আন্দোলন প্রত্যাহার ও সরকারের সাথে আলোচনায় বসার জন্য জবরদস্তি করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ছাত্রজনতা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিল৷ সরকার দমন-পীড়ন করে সেটিকে সংঘাত ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধ করে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এবার এরকম পরিস্থিতি হলে কারো জন্যই পরিণতি ভালো হবে না। পরবর্তীতে ডিবি অফিস থেকেও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমাদের অনশন ও রাজপথে আন্দোলনের কারণে সে পরিকল্পনা সফল হয়নি।
রক্ত ঝড়লে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, আমরা এখনো শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে চাই। আমরা কোনো সহিংসতা, প্রতিহিংসা ও প্রাণনাশ চাই না৷ নিরাপত্তা বাহিনীকেও এর জন্য সহযোগিতা করতে হবে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রাজপথে দেখা গেলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এর দায়ভার নিতে হবে। তবে রক্ত ঝড়লে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা ন্যায়বিচার ও জীবনের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
গুলির নির্দেশ বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। কোনো ধরনের দমন-পীড়ন, প্রোপাগাণ্ডা ও ষড়যন্ত্র করে এ আন্দোলন থামানো যাবে না। জরুরি অবস্থা বা কারফিউ ছাত্র-নাগরিক মেনে নিবে না। শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি চাইলে গুলি ও হামলা করার নির্দেশ বন্ধ করতে হবে। অসহযোগ আন্দোলনের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হবে।
সংলাপের বিষয়ে এই সমন্বয়ক বলেন, খুনি সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসারও সুযোগ আর নেই। ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পার হয়ে গেছে। যখন সময় ছিল তখন সরকার ব্লক রেইড দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করেছে, নির্যাতন করেছে। আখতার হোসেন, আরিফ সোহেলসহ রাজবন্দিদের কারাগারে রেখে আমরা কোনো ধরনের সমঝোতায় যাব না।
তিনি আরো বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান থাকবে খুনি সরকারকে সমর্থন না দিয়ে ছাত্র-নাগরিকের পাশে থাকুন। সরকার জনগণের বিপক্ষে দাঁড়ালে সেই সরকারের হুকুম শুনতে আপনারা আর বাধ্য নন। ছাত্রদের সাথে মিছিলে যোগ দিন। আমরা পুলিশ নয়, হুকুমের আসামিকে কাঠগড়ায় দাঁড়া করাতে চাই। নিরাপত্তা বাহিনীকে মিছিলে যোগদানের আহ্বান থাকবে। সবাই শান্তিপূর্ণভাবে আজকের বিক্ষোভ ও আগামীকাল থেকে অসহযোগ কর্মসূচি সফল করুন।
