শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইডেনের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

ইডেন মহিলা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আফরোজ, শাহিনুর সুমি, সুমাইয়া সাইনা, সানজিদা হক ও স্কাইয়া ইসলামসহ ১০ জন। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ইডেন কলেজে ছাত্রলীগ আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর হামলা করেছে। এতে আহত হয়েছেন ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সায়মা আফরোজ, ইডেন কলেজ শাখার সভাপতি শাহিনুর সুমি, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সাইনা, অর্থ সম্পাদক সানজিদা হক এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের ঢাকা নগরের সংগঠক স্কাইয়াসহ অনেকে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যোগ দিতে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর গরম পানি ঢেলে দেন এবং মারধর করেন। এতে সুমিসহ কয়েকজন আহত হন। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে গতকাল রোববার মধ্যরাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও। তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে সেখানেও হামলা চালায় ছাত্রলীগ।

সোমবার সরকারি চাকরিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা- ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কে রাজাকার কে রাজাকার, তুই রাজাকার তুই রাজাকার’, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র কারো বাপের না’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘আমার স্বাধীন বাংলায়, একের কথা চলে না’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না’ অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, হামলা/মামলা দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

প্রসঙ্গত, রোববার (১৪ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ