স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারী সিদ্ধান্ত কমিউনিটি ক্লিনিক। এই কমিউনিটি ক্লিনিক এখন দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে। এর মাধ্যমেই নানারকম স্বাস্থ্যসেবাগুলো এখন বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
বুধবারজেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের পক্ষে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভিশনারী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সরকারের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর।
তিনি বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার মান ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ কমিউনিটি ক্লিনিক (শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ) স্থাপনে কৌশলগত বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইপিআইপ্রোগ্রামের মাধ্যমে ১০ টি রোগের বিরুদ্ধে টিকা প্রদান, গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী মাতৃস্বাস্থ্য সেবা বাড়ানোর ফলে বিগত ২০ বছরে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে দক্ষিণ- এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে।
সামন্ত লালসেন বলেন, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কারণে গড় আয়ু ১৯৭১ সালে ৫০ থেকে বেড়ে বর্তমানে তা ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে এসকল অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে বহু পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচক সমূহ অর্জনে বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
সম্মেলনে বক্তব্য উপস্থাপন করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলটি একই দিনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বি-পাক্ষিক ও সাইড মিটিং এ অংশ নেন।
এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশ সমুহে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিষ্টেন্সের বিরুদ্ধে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে জাপান সরকারের আমন্ত্রণে একটি ব্রেকফাস্ট মিটিং এ অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিষ্টেন্সের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের সদিচ্ছা, দৃঢ় অবস্থান, কার্যকরী পদক্ষেপসহ আন্তর্জাতিকভাবে নেতৃত্ব দেয়ার কথা পূণর্ব্যক্ত করেন। ইউএনআইসিইএফ-এর ডেপুটি নির্বাহী পরিচালক ডা:টেডের
সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল খাদ্যে সীসাসহ অন্যান্য কারণে শিশু স্বাস্থ্যের ঝুঁকি মোকাবিলা ও তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতকণ এবং মাতৃ মৃত্য ও শিশু মৃত্যু রোধে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদের সাথে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অগ্রগতির চিত্রসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরেন।
আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের সাধারণ সভায় এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিষ্টেন্সের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। এছাড়া তিনি ৭-১০ অক্টোবর, দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক কমিটির ৭৭ তম সভা বাংলাদেশে আয়োজনে সম্মত হওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে তা সফল করতে সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন।
সাসাকাওয়া ফাউন্ডেশনের সাথে আরেকটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে লেপরোসী নির্মূলে ফাউন্ডেশনের সহযোগিতার জন্যে ধন্যবাদ জানিয়ে তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।