মানুষের কল্যাণে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে ‘ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কোর্সের (ডিএসসিএসসি) প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন।
আজ বুধবার রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ডিএসসিএসসি কোর্স-২০২৩ এর প্রশিক্ষণার্থীদের এক অনুষ্ঠানে ভাষণকালে এই আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জগুলো গতিশীল ও বহুমুখী, এবং প্রচলিত হুমকি থেকে শুরু করে অপ্রচলিত রূপ পর্যন্ত। এখানে নেয়া এই কঠোর প্রশিক্ষণ আপনাদেরকে নানা জটিল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং জ্ঞানার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে।’
রাষ্ট্রপতি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের কল্যাণে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া একজন জনসেবক হিসেবে আপনার সর্বোচ্চ কর্তব্য।
প্রশিক্ষণার্থীরা নিজ নিজ দেশের নিয়ম-কানুন ও সংবিধান মেনে সম্মান, সাহসিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন বলে তিনি আশা করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন ডিএসসিএসসি কোর্স সফলভাবে সমাপ্ত করার জন্য স্নাতকদের অভিনন্দন জানান। পরে স্নাতক কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রম এবং মেধাকে স্বীকৃতি হিসেবে সনদ প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ডিএসসিএসসি কমান্ড্যান্ট এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদেরকে অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে সফলভাবে প্রোগ্রামটি সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন,ডিএসসিএসসি যোগ্য নেতৃত্ব প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এবং তারা নিজ নিজ দেশের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অসাধারণ অবদান রাখতে পারে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সরকার দেশের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে শক্তিশালী করতে ক্রমাগত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের জন্য ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করেছে।
ডিএসসিএসসি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রাচীনতম ট্রাই-সার্ভিস সামরিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ডিএসসিএসসি অসাধারণভাবে বিকশিত হয়েছে, যা বিশ্বের সশস্ত্র বাহিনীতে এই কলেজের স্নাতকদের বর্ধিত চাহিদার পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।
এখন পর্যন্ত মোট ৬২৩৬ জন কর্মকর্তা এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থেকে সফলভাবে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। এ বছর ২৪টি বন্ধুপ্রতীম দেশের ৪৯ জন বিদেশী কর্মকর্তাসহ মোট ২৫৭ জন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং স্বাধীনতায় সকলের সুখী-সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিত করার স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আমাদের অর্থনীতিতে অনেক উত্থান-পতন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান।
অনুষ্ঠানে তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন লবিতে দু’টি ফটো সেশনেও অংশ নেন।
এনএফ/এসএ।