প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ সকল ধর্মের মানুষের জন্য শান্তি ও সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র যখন দেশ পরিচালনা করেছে তখন রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় কর্মসূচি চালানো হয়েছিল।
দুর্গা বিসর্জন উপলক্ষে বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, এই বছর পূজাটি উৎসবের মধ্যে উদযাপিত যা আওয়ামী লীগ সমুন্নত রেখেছে।
সংখ্যালঘুদের ওপর ধর্ষণ, হত্যা, লুটপাট ও উপাসনালয় ও বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলাসহ অন্তত ২৮ হাজার হামলার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, বিএনপি জামায়াতের আমলে সংখ্যালঘুদের জীবন ওলট-পালট হয়ে গিয়েছিল।
সংখ্যালঘু নেতারা এই বছর প্যান্ডেলের সংখ্যা বেডড়ে যাওয়ায় সারা দেশে নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।
বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে সংখ্যালঘুরা “তাদের উপর ব্যাপক সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়েছিল এ কথা স্বীকার করতে তারা অনিচ্ছুক এ কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে “সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়” বলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াত ইসলামির প্রচারনার বিষয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা সম্প্রতি নিন্দা জানিয়েছে।
সজীব ওয়াজেদ বিএনপি জামায়াতের এই ধরনের অপরাধ করার বিষয়টি অস্বীকার করাকে একটি “ব্যর্থ ভাবমূর্তি তৈরির মহড়া” বলে অভিহিত করেছেন এবং ১৯৭১ সালে সংঘটিত সবচেয়ে খারাপ গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চক্রান্তের মতো ঘৃণ্য বলে তুলনা করেছেন।
আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহনের সাথে সাথে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে মনে করিয়ে দিয়ে তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নে প্রতিটি ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির সাথে বসবাস করতে পারে এটা আমাদের অঙ্গীকার।
এছাড়াও তার পোস্টে একটি সংক্ষিপ্ত ডকুমেন্টারি রয়েছে যা মিডিয়া রিপোর্টের একটি সিরিজ সংকলন এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে বিএনপি জামায়াত সমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর হিন্দুদের উপর সংঘটিত অনেক নিষ্ঠুর সহিংসতার একটি ফ্ল্যাশব্যাক।
২০০১ সালে বিএনপি জামাত ক্ষমতায় আসার পরপরই, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাস চালানো হয়, যার মধ্যে ধর্ষণ লুণ্ঠন এবং উপাসনালয় ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ভোলার একটি প্রত্যন্ত উপজেলায় ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর প্রায় ২০০ হিন্দু মহিলার ধর্ষণের রিপোর্টের ঘটনা উল্লেখ করে, ভিডিওটি মিডিয়া রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়েছে যেগুলো বিএনপি জামাত ক্যাডারদের সরাসরি জড়িত থাকার দাবি করেছে।
ভিডিওটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে, একজন চার বছরের নাবালক বা একজন ৭০ বছর বয়সী কেউই এই সন্ত্রীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।
সম্প্রদায়ের নেতারা বলেছেন, ধর্ষণের মতো নৃশংসতা সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছিল, তাদের দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করা হয়েছিল।
গণ মাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশ করে যে যারা বর্বরতায় অংশ নিয়েছিল তাদের প্রতি ছিল সরাসরি বিএনপি জামায়াত নেতাদের সমর্থন।
এই ধরনের নিছক নৃশংসতার মুখোমুখি হয়ে, শত শত হিন্দু সম্প্রদায় দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে বড় দোষ ছিল আওয়ামী লীগকে সমর্থন করা”, ভিডিওটিতে বলা হয়।
ভিডিওটি বিএনপি জামায়াতের লোকদের আরেকটি চক্রান্তের কথাও মনে করিয়ে দেয়। যাতে তারা ৫ মার্চ, ২০০৩ তারিখে নীলফামারীর একটি প্রত্যন্ত ইউনিয়নে ভক্তদের মন্দিরে প্রার্থনায় যোগদান বন্ধ করতে বাধ্য করেছিল।
আওয়ামী লীগের প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের সমর্থনে ক্ষুব্ধ, বিএনপি জামায়াতের ক্যাডাররা একটি মন্দির ঘেরাও করে যাতে কেউ ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে না পারে।
বগুড়ায়, প্রতিমা ভাংচুরের খবর পাওয়া গেছে যখন সীতাকু-সহ বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের ওপর নতুন করে ভয়াবহ ভীতি ছড়ানো হয়েছে।
শনাক্ত হওয়ার ভয়ে, হিন্দু মহিলারা এমনকি কপালে সিঁদুর লাগাতে বা চুড়ি পরা থেকে বিরত থাকে, যা তাদের অগ্নিপরীক্ষার একটি নির্দেশক।
দেশকে সাম্প্রদায়িকতায় পরিণত করার লক্ষ্যে এমন নৃশংসতার প্রতিবাদে সম্প্রদায়ের নেতারা অনশন করেছিলেন।
সংক্ষেপে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নিপীড়নের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের নির্মূল করা বিএনপি জামায়াতের শেষ শাসনের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।