জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে তিন দিনের ভারত সফর শেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট, প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে চারটার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৮ মিনিটে (আইএসটি) ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া সিং প্যাটেল।
এর আগে গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে নয়াদিল্লিতে যান।
একইদিন সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। এর আগে অবশ্য দুদেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
এগুলো কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা, সংস্কৃতি বিনিময় ও বাংলাদেশি টাকা এবং ভারতীয় রুপির (দুই দেশের সাধারণ মানুষ) মধ্যে লেনদেন সহজ করা সম্পর্কিত।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিন্ন ভিন্ন অধিবেশনে যোগ দেন। শীর্ষ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘ওয়ান আর্থ, ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান ফিউচার’ শীর্ষক দুটি বক্তৃতা দেন তিনি।
‘ওয়ান আর্থ’ ও ‘ওয়ান ফ্যামিলি’ সেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড মহামারির পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউরোপে যুদ্ধের ফলে জ্বালানি, খাদ্য ও সারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবেলা করা যায় তা তুলে ধরেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদকালে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য সাফল্যের অভিজ্ঞতা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে উপস্থাপন করেন।
সম্মেলনের সাইডলাইনে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজ, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।
জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনের শুরুতে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দেশটির জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় সকাল ৯টার পর রাজঘাটে গান্ধী সমাধিতে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরিয়ে দেন উত্তরীয়।
এক ঝাঁক বিশ্বনেতাকে স্বাগত জানানোর ব্যস্তময় কর্মসূচির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কিছু সময় আলাপচারিতা করতে দেখা যায় নরেন্দ্র মোদিকে।
একে একে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকসহ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিধর দেশের শীর্ষ নেতারা। এরপর জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেয়া বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান শেখ হাসিনা।
এরপর জি-২০ সম্মেলনের শেষ দিনে তৃতীয় সেশন ‘ওয়ান ফিউচার’ শীর্ষক অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।