সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অনিয়মই যেখানে নিয়ম!

রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে সকল অনিয়মই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ভূমির নামজারী ও মিসকেস বাদি-বিবাদীকে পাইয়ে দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য হচ্ছে ভূমি কার্যালয়ে। একজনের জমি অন্যজনের নামে সহজেই বদল করার অভিযোগ ওঠেছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার পশি মৌজায় এসএ ৭৬৩, ৭৭৪, ৭৫৬ নং ও আরএস ৯২৮, ৯২৭, ৮৪৬ নং দাগে ৯১ দশমিক ৮৩ শতাংশ সম্পত্তি ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে বাগবের এলাকার সুলতান উদ্দিন ভুঁইয়া, নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া, সিরাজ উদ্দিন ভুঁইয়া, ঢাকার কুড়িল চৌরাস্তা প্রগতি স্বরণী রোডের মোবারক হোসেনের ছেলে মাহাবুব হোসেন, মাহমুদ হোসেন এবং বনানী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ওয়াজি উল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহ নামজারী করে নেয়। এ ঘটনা জানতে পেয়ে জমির প্রকৃত মালিক রতন দাস, চন্দ্র কিশোর বাদল ও চন্দন দাস বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মিসকেছ দায়ের করেন। পরে ওই মিসকেছ আমলে নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে স্থানান্তর করে। মামলাটি চলমান থাকাবস্থায় বাদিপক্ষ ও বিবাদী পক্ষের ৬জনের মধ্যে ২জন হাজিরা দিয়ে আসছিল। তবে বিবাদী পক্ষের সুলতান উদ্দিন ভুঁইয়ার ছেলে রূপগঞ্জ উপজেলা উত্তর থানা জামায়াত ইসলামের আমীর হারুন উর রশিদ ভুঁইয়ার কাছ থেকে রূপগঞ্জ এসিল্যান্ড ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে কাগজপত্র না দেখেই মামলাটি খারিজ করে দেন। অথচ ওই মামলার সার্ভেয়ার জামাল হোসেনের সাথে কোনো পরামর্শ না করেই এসিল্যান্ড আতিকুল ইসলাম এ সিদ্ধান্ত নেন। 

মামলার আদেশ সূত্রে জানা গেছে, বাদীর অনুপস্থিতিতে মামলা খারিজ করা হলো। তাছাড়া ওই জমির দুইজন ওয়ারিশ দাবিদার। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ দেয়ার চেয়ারম্যানের কোনো এখতিয়ার নেই বলে জানান এসিল্যান্ড। গত ২৩ জুন মামলার শুনানিকালে বাদিপক্ষকে চেয়ারম্যানের দেয়া ওয়ারিশ চলবে না মর্মে আদালত থেকে ওয়ারিশ সনদ আনার পরামর্শ দেন। এদিকে ওই দিনই বাদিপক্ষকে না জানিয়ে ৪২৪/২০২২ নং মামলাটি খারিজ করে দেন। অথচ সকল তারিখে বাদী উপস্থিত ছিল। বাদিপক্ষ এক মাসের মধ্যে আদালত থেকে সাকসেশন সনদ আনার কথা দেন। তারপরও মামলা খারিজ করে দেন বলে মামলার বাদী রতন দাস জানান।  

ভুক্তভোগীরা জানান, বিগত দিনে এ ধরণের অনিয়মের অভিযোগে এসিল্যান্ড অফিসের সামনে কাফনের কাপড় করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। প্রায় সময়ই অফিসের ভিতর হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটে। 

রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুল ইসলাম জানান, টাকা লেনদেনের বিষয়টি সঠিক নয়। তবে বাদিপক্ষকে কোর্ট থেকে সাকসেশন সনদ আনতে বলেছি। বিবাদীপক্ষের হারুন উর রশিদ বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের রূপগঞ্জ থানা শাখার আমীর বলে আমার জানা ছিল না।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ