শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এমপি নদভীর বিরুদ্ধে ৮ ইউপি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চারতি ইউনিয়নে এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আরেক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যের দাবি স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভীর প্রত্যক্ষ মদদে এই হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেছে চারতি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এসময় একই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের আরো ৭ ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি চারতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল্লা চৌধুরীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জব্দ করা বালু ও অ্যাস্কেভেটর চুরির অভিযোগ দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সাময়িক বহিস্কৃত চেয়ারম্যান রুহুল্লা চৌধুরী স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভীর শ্যালক ও জামায়াত নেতা মুমিনুর রহমানের ছেলে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি।

ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের অভিযোগ, চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত হওয়ায় তার অবর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে নিজেকে ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান দাবি করে সাংসদ নদভীর সুপারিশে দায়িত্ব পালনের ঘোষণা দেন। এই বিষয়ে বাঁধা দিলে অন্য ইউপি সদস্যদের মামলায় জড়িয়ে জেলে পাঠানো ও প্রাণনাশের হুমকী দেন। একই বিষয়ে সাংসদ নদভীর ভাতিজা আ.ন.ম সেলিমও এমপির ‘আদেশ’ জানিয়ে অন্যান্য ইউপি সদস্যদের একই হুমকী দেন।

লিখিত বক্তব্যে সাইফুল বলেন, ‘নীতিবহির্ভূত এমন কার্যক্রমের প্রতিবাদ জানাই আমরা। আমাদের (৮ ইউপি সদস্য) যৌথ স্বাক্ষরে ইউএনও এবং জেলা প্রশাসক লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এতে অভিযুক্ত নুরুল ক্ষিপ্ত হয়ে নদভীর নির্দেশে আমাদের নানান হুমকী ও হয়রানি শুরু করেন।’

‘এর ধারাবাহিকতায় ১৯ জুলাই রাত তিনটায় দক্ষিণ চারতি এলাকায় আমার বাড়িতে নুরুল আমিনের নেতৃত্বে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। তারা বাড়িতে ভাংচুর ও আমাকেসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার চেষ্টা করে। এসময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর আমরা ৮ ইউপি সদস্য সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। কখন কার উপর হামলা হয় কেউ জানে না।’

তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের নারী সদস্য আকতার বেগমের ছেলে নদভী পরিচালিত আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু আক্তার বেগম এমপির পক্ষ না নেওয়ায় তার ছেলেকে চাকুরীচ্যুত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইউপি সদস্য সাইফুল বলেন, মাননীয় নেত্রী আপনি মানবতার মা। আপনি ছাড়া অসহায় এই মানুষদের জন্য আর কোন আশ্রয় নেই। প্রিয়নেত্রী, আপনি দেখুন হাইব্রীড এমপির নির্যাতনে কিভাবে আমরা জীবনযাপন। আমি এবং আমার পরিবার আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী। আপনার ডাকে আমরা সারাজীবন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আপনার কর্মীকে আজ জামায়াত হতে আগত এমপি ও তার পেটোয়া বাহিনী নির্যাতন করে এলাকাছাড়া করার পরিকল্পনা করছে। আমরা আপনার কাছ থেকে সুবিচার চাই।

এর আগে গত মে মাসে সাংসদ নদভীর ছত্রছায়ায় সাতকানিয়ায় কামাল উদ্দিন নামের এক ক্যান্সার আক্রান্ত প্রবাসীর ইটভাটা দখলের অভিযোগে উঠে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

২৭ মে চট্টগ্রাম নগরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী কামালউদ্দিনের স্ত্রী মোর্তজা বেগম এ অভিযোগ করেন। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মানিকের নেতৃত্বে শাহ মজিদিয়া ব্রিকস (এসএমবি) নামের ওই ইটভাটায় লুটপাট ও ভাঙচুর হয়েছে। আর এতে সরাসরি স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী সহযোগিতা করছেন বলে দাবি করেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ